নরসিংদী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলা নং ২০০/২২-এর বিচার কার্যক্রম দীর্ঘদিন স্থগিত থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিজিবি সদস্য শামীম আহম্মেদের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা। শনিবার (১৫ নভেম্বর) গণমাধ্যমকে তিনি জানান, চার বছর ধরে পাঁচ বছর বয়সী কন্যা সাইফাকে নিয়ে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না।
অভিযোগ অনুযায়ী, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার নলুয়া গ্রামের মো. শাহজাহানের মেয়ে তানিয়া সুলতানার সংসার ভাঙ্গার আগেই তার স্বামী শামীম আহম্মেদ (বিজিবি সদস্য নং ৮৯৭৯০) একই এলাকার বেলায়েত হোসেন শান্তি মুক্তারের মেয়ে ও দুই সন্তানের জননী সামিয়া আফরোজ শুভ্ররার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন বলে দাবি তানিয়ার।
তানিয়ার অভিযোগ,এরপর থেকেই তার ওপর শুরু হয় যৌতুকের দাবি ও শারীরিক নির্যাতন। নির্যাতনে তার হাত–পা ভেঙ্গে গেলে তাকে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিয়ের অধিকার, ভরণপোষণ এবং সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের দাবিতে তিনি নরসিংদী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের এক কর্মকর্তার দেওয়া প্রত্যয়নপত্রের কারণে মামলার বিচারকাজ ব্যাহত হয়। মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর শামীম আহম্মেদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে ক্রিমিনাল আপিল (নং ৯৯৭১/২০২৪) দায়ের করা হলে আদালতের বিচারক প্রথমে তিন মাস এবং পরে এক বছরের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। এতে বিচারপ্রক্রিয়া পুরোপুরি থমকে যায়।
তানিয়া সুলতানা বলেন, চার বছর ধরে সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। মামলার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো ভরণপোষণ পাচ্ছি না। স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সংসার করছে, আর আমি আদালতের বারান্দায় অসহায় হয়ে পড়ছি। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।
আইনজীবী আসাদুজ্জামান বলেন,পারিবারিক মামলার দীর্ঘসূত্রতা নারীর আর্থিক, মানসিক ও সামাজিক অবস্থাকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিচার স্থগিত থাকা মানে নারী ও শিশুর মৌলিক অধিকার ঝুলে থাকা। তানিয়া সুলতানার দাবি, হাইকোর্ট যেন দ্রুত মামলাটির নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন এবং মূল আদালতে পুনরায় শুনানি শুরু হয়-এটাই তার একমাত্র প্রত্যাশা।