সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা নিউজ: শেষ বলে দারুণ নাটকীয়তা তৈরি হলো। রান দরকার ৪। ব্যাটসম্যান আরিফুল হক সজোরে হাঁকালেন রশিদ খানকে। বল একেবারে সীমানায়। সীমানার বাইরেই চলে গিয়েছিল; কিন্তু লাফিয়ে উঠে শূন্যে থেকে সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশের ব্যবধানে সেই বলকে বাউন্ডারির বাইরে থেকে ফিরিয়ে দিলেন শফিকুল্লাহ।
একটি ম্যাচ জেতার জন্য কী প্রাণপণ চেষ্টা আফগানদের, সেটা শরিফুল্লাহর এই ফিল্ডিং না দেখলে কল্পনাই করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত দৌড়ে ২ রান নিলেন আরিফুল এবং রিয়াদ। ১ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ। সে সঙ্গে আফগানিস্তানের কাছে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেতে হয় সাকিবদের।
ভারতের দেরাদুনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে দলীয় ৫৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। বিশেষ করে সৌম্য সরকার ও লিটন দাস দ্রুত রানআউট হয়ে ফিরে দলকে বিপদের মধ্যেই ফেলে দিয়েছিলেন। দলকে এই বিপদ থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক ৮৪ রানের জুটি গড়েও পারেননি দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে। মাহমুদউল্লাহ ৪৫ ও মুশফিক ৪৬ রান করে ফিরেন।
বিশেষ করে করিম জানাতের করা ১৯তম ওভারে টানা ৫টি বাউন্ডারি মেরে মুশফিকুর রহীম ম্যাচটাকে একেবারে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছিলেন। ১৯তম ওভারেই উঠেছিল ২১ রান।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ৯ রান; কিন্তু রহস্যময় স্পিনার রশিদ খান শেষ ওভারে এসে বাজিমাত করলেন। ওভারের প্রথম বলেই রশিদ খানকে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে একেবারে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন মুশফিক। ৩৭ বলে ৪৬ রান করে ফিরে যেতে হলো মুশফিককে। অন্যদিকে সেট ব্যাটসম্যান ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রশিদ খানকে দ্বিতীয় বলে নিলেন ১ রান। নতুন ব্যাটসম্যান আরিফুল হক নিলেন তৃতীয় বল থেকে দুই রান। পরের বলে আবারও সিঙ্গেল। সুযোগ পেলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু তিনি বিগ শট না খেলে এক রান নিয়ে দিলেন আরিফুলকে। শেষ বলে বাউন্ডারি মারতে গিয়েও হলো না। চরম দুর্ভাগ্যের কারণে শেষ বলে বাউন্ডারি থেকে বেঁচে গেল আফগানরা। সে সঙ্গে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশকে।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করা আফগানিস্তান নিজেদের ইনিংসে সংগ্রহ করেছে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান। তিন পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ দলের বোলিংয়ের উদ্বোধনটা মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়েই করিয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব। তবে সেই ওভারেই শাহজাদ তুলে নেন ১৮ রান।
পরের চার ওভারে নাজমুল ইসলাম অপু, অধিনায়ক সাকিব আর আবু হায়দার রনি টেনে ধরেছিলেন আফগানদের রানের চাকা। রনির করা প্রথম ওভারে আঘাত পেয়ে একটু মন্থর হয়ে পড়া শাহজাদকে শেষমেশ ফিরিয়েছিলেন অপুই।
প্রথম টি-টোয়েন্টির বাজে বোলিংয়ে পরের ম্যাচে একাদশেই সুযোগ হয়নি আবু জায়েদের। তবে তৃতীয় ম্যাচে এসে দারুণ বল করে দুই উইকেট শিকার করেছেন ডানহাতি এই পেসার। প্রথম তিন ওভারে দারুণ মিতব্যয়ী থাকলেও শেষ ওভারে একটু খরুচেই ছিলেন আবু জায়েদ।
আরিফুল হক ফিরেই পেয়েছিলেন বোলিংয়ের সুযোগ। আফগান দলনায়ক আজগর স্ট্যানিকজাইকে ফিরিয়ে উইকেটও তুলে নিয়েছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে এদিন বাংলাদেশের বোলিংটা হয়েছে দারুণ। তাই প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে পেরেছিল ১৪৫ রানে।