বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৬ অপরাহ্ন

নিজ মুখে রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিলেন সাবেক সেনা সদস্য

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
  • ৭৩২

রোহিঙ্গা নিধনে সেনা কর্মকর্তাদের ভয়াবহ নির্দেশ নিজ কানে শুনেছেন। নিজ চোখে দেখেছেন রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার চিত্র। জ্বলতে দেখেছেন নিজের গ্রামও। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। ভাবেই রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেন মিয়ানমারের সাবেক সেনা সদস্য।

গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাখাইন রাজ্যের তুলাতলি গ্রামে সেনাবাহিনীর হামলার নৃশংসতা তুলে ধরেন নাজমুল ইসলাম। এক রোহিঙ্গা নারীকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন। গ্রামের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা ৬০ বছরের নাজমুলকে হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে আটক করা হয়।

প্রায় একদশক ধরে রাখাইনে দায়িত্ব পালন করা এ সেনা সদস্যের দাবি, হামলার দিন তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নিজের গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে দেখেছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিমান থেকে নেমে সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নির্দেশ দেন, রোহিঙ্গাদের সবাইকে মেরে ফেল। যারা রোহিঙ্গাদের গুলি করবে না তাদেরকেও হত্যা কর।

তারা আরও নির্দেশ দেন, রোহিঙ্গাদের লাশ নদীতে ফেলে দিও না, আগুনে পুড়িয়ে দাও। সাক্ষাৎকারে নাজমুল বলেন, শেষ বিকালে তুলাতলি থেকে যখন মানুষ পোড়া গন্ধ ভেসে আসছে তখন এক সেনা কর্মকর্তা গ্রামবাসীদের উদ্দেশে চিৎকার করে ওঠেন, ‘আমাদের একশ’ প্লেট ভাত আর মুরগির মাংস দরকার। তাড়াতাড়ি নিয়ে আসো।’ মানুষ পোড়ানোর গন্ধে ভিটে-মাটি ছেড়ে পালাচ্ছিল গ্রামবাসী।

গত আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ ওই সহিংসতাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলে মন্তব্য করে।

সহিংসতার মুখে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামে নৃশংসতার পর নাজমুলের স্ত্রী তাদের পাঁচ সন্তানকে নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। নাজমুলের দাবি, কয়েক সপ্তাহ আটক রেখে কর্মকর্তারা তার ওপর আবারও বৌদ্ধধর্মে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com