শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

স্বাধীনতা দিবসে বিশেষ খাবারের জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করতে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে ভুয়া রোগী ভর্তি! ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস সিভিল সার্জনের

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৬ মার্চ, ২০২১
  • ৩৪৪

মোঃ জহিরুল ইসলাম সবুজ,আগৈলঝাড়াঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ৫০শয্যার উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদারের যোগশাযশে বেডে রোগী না থাকলেও রেজিষ্ট্রারে রোগী ভর্তি দেখিয়ে খাবারের পাকা ভাগাভাগি করে নেয়ার প্রমান প্রমান মিলেছে। “কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই” চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটনের পর থেকেই বিষয়টি চেপে যাবার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে তদবির শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে ৫, ৮, ৯, ১২, ১৪, ১৭, ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪১, ৪২নং বেডসহ মোট ১২টি বেড খালি রয়েছে। অথচ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের রেজিষ্ট্রার খাতায় দেখা যায় সকল বেডে ভর্তি রোগীর ভর্তির কারণে অতিরিক্ত বেডে ভর্তি দেখানো হয়েছে হাসপাতালের স্টাফ নারায়ণ, স্টাফ মোরসেদা পারভীন, স্টাফ মাসুদ হোসেন, তাদের আত্মীয়-স্বজন ফুলজান বেগম, রিজিয়া বেগম, শাহজাহান, সিরাজ খান, মিজানুর রহমানসহ ৮জনকে ভর্তি দেখানো হয়েছে। ভর্তি বহিতে প্রত্যেককে দুর্বলতার জন্য ভর্তি দেখানো হলেও হাসপাতালের বেড তো দূরের কথা দুই ঘন্টা অবস্থান করেও এই সকল ভুয়া রোগীর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে ডিউটিরত নার্স মাধবী লতা রাজীব, আভা রানী করাতী ও সাহিদা সুলতানা জানান, এরকম অনেক রোগীই হাসপাতালের খাতায় ভর্তি দেখানো হলেও বাস্তবে তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
সূত্র মতে, ৫০শয্যার হাসপাতালে শয্যার অধিক রোগী থাকলে তাদের ফোরে বেড দেয়া হয়। যা এক্সটা বেড বলে খাতায় লেখা হয়। কিন্তু হাসাপতালের ১২টি বেড খালি থাকা সত্বেও হাসপাতালের ষ্ঠাফ ও তাদের স্বজনদের নামে “এক্সট্রা” বেড দেয়ার বিষয়টি পুরো রহস্যজনক।
নাম না প্রকাশের শর্তে একটি বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ২৬মার্চ স্বাধীনতা দিবসে সরকারের বিশেষ খাবার পরিবেশনের জন্য রোগী প্রতি ২শ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। সরকারের বিশেষ বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নিতে হাসপাতালের একটি চক্র সকল সময়ে তৎপর থাকে। ওই চক্রটি শুধু বিশেষ দিন নয় মাসের অন্তত ২০দিন এহেন কাজ করে রোগী ভর্তি দেখিয়ে তাদের নামের খাবারের অর্থের ১২৫টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে মাস শেষে ঠিকাদারের কাছ থেকে ভাগাভাগি করে নেয়।
এদিকে ওই ভুয়া রোগীদের ক্ষেত্রে কর্তব্যরত চিকিৎকেরা রোগীকে না দেখেই তাদের নামে ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ লিখে দিচ্ছেন। রোগী না দেখে ঔষধ লিখে দেয়ার বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, রেজিষ্ট্রারে রোগী ভর্তির কারণ লেখা দেখেই ঔষধ লেখেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (প্রধান কর্মকর্তা) ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, হাসপাতালের পুরো বেডে রোগী ভর্তির পরেই কেবলমাত্র এক্সট্রা বেড ব্যবহার করা হয় বা লেখা হয়। দিন শেষে কত রোগী ভর্তি আছে এমন একটি কাগজে তার স্বাক্ষর নেয়া হয়। তবে তিনি রোগী গুনে ওই কাগজে প্রতিদিন স্বাক্ষর করেন না। রোগী ভর্তির গোজামিলের বিষয়ে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মানোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখ জনক। এটা হওয়া কোন রকমেই উচিত না। এবিষয়ে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে এই প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করেন।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com