শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। বাঙালির জীবনে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনের কালরাতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল বিপথগামী কিছু সেনাসদস্য।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক বাড়িতে সেই রাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং শিল্পী আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন পৃথিবীর ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
ওই সময় দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
শোকাবহ এ দিনটি পালনে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সরকারিভাবেও দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বেতার, টিভিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গণমাধ্যম বিশেষ ক্রোড়পত্রসহ নিবন্ধ প্রকাশ করছে। আজ রোববার সরকারি ছুটি। জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এ মাসের প্রথম দিন থেকেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে। প্রতি বছরের মতো এবারো সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি।
সরকারি কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসহ বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং আলোচনা সভা। এছাড়াও সকালে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ঐতিহাসিক রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন। টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ, সশস্ত্রবাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদান এবং মুনাজাত। সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক ও ফুলের পাপড়ি অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও দোয়া। সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফাতেহা পাঠ, প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ, সশস্ত্রবাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদান এবং বিশেষ দোয়া মাহফিল ও মুনাজাতের আয়োজন।
দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও যথাযোগ্য মর্যাদায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে তারা কর্মসূচি পালন করবে। সব সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করবে।
তথ্য মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, বিভাগ ও সংস্থা জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করবে। তথ্য মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন সংস্থা ও অধিদফতরের মাধ্যমে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে আলোকচিত্র প্রদর্শনী, নিরীক্ষা, সচিত্র বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, স্মরণিকা ও বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।