সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ২৯ দিনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির পর জীবিত উদ্ধার হলেও মুখে কুলুপ এটেছেন দেশব্যাপী আলোচিত গৃহবধূ রহিমা বেগম। কোনো কথাই বলছেন না তিনি। এমনকি তিনি তার সন্তানদের কাছেও যেতে চাচ্ছেন না।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় পিবিআই খুলনার দপ্তরে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদপুরের বোয়ালিয়ার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর রাতে খুলনায় আনা হয। বর্তমানে তিনি পিবিআই কার্যালয়ে রয়েছেন।
রহিমা বেগম কিছুটা নার্ভাস ফিল করছেন উল্লেখ করে মুশফিকুর রহমান বলেন, তাকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। একটু স্বাভাবিক হলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তার নিখোঁজের বিষয়ে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করা হবে বলে তিনি আশা করছেন।
রহিমা বেগমের নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান কর্তৃক ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া ময়মনসিংহে অজ্ঞাত নারীর লাশকে নিজের নিখোঁজ মা রহিমা বেগমের বলে দাবি করায় প্রশাসন বিভ্রান্ত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগম অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ৬ জনের বিষয়ে আদালতে সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া রহিমা বেগমের সঙ্গে ফরিদপুর থেকে আটককৃত আরও তিনজনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে নিরপরাধ কাউকে এই ঘটনায় সম্পৃক্ত করা হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জানান, উদ্ধারকৃত রহিমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আদালত থেকে হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে নিখোঁজ মাকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মরিয়ম মান্নান। সর্বশেষ তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ফেসবুকে তার মায়ের লাশ পাওয়া গেছে বলে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় পৌঁছান। সেখানে দাফন হওয়া লাশের জব্দকৃত পোশাক দেখে মরিয়ম মান্নান তার মায়ের লাশ বলে দাবি করেন।
পুলিশ জানায় কেবলমাত্র ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ওই লাশ তার মায়ের কিনা তা জানা সম্ভব। ইতিমধ্যেই মরিয়ম মান্নান ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তার সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তারা খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন।
এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে আসছিলেন তার সন্তানরা।