রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক : বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্যে কারা রয়েছেন, সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ সম্বলিত একটি ভিডিও চিত্র তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
শনিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করেন তিনি। এদিন বিডিআর বিদ্রোহের ১৪ বছর পূর্ণ হয়েছে।
‘বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্যে কারা? সেনা অফিসার হত্যার মিশনে কার লাভ, কার ক্ষতি?’- এমন শিরোনামের ওই ভিডিওতে বলা হয়, ‘বিডিআর বিদ্রোহের আগের দিন থেকে পরবর্তী দুইদিন খালেদা জিয়া কোথায় ছিলেন? ঘটনার আগের দিন তারেক রহমান লন্ডন থেকে রাত ১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৫ বার খালেদা জিয়াকে কল করেন এবং সকাল ৬টার মধ্যে বাসভবন ত্যাগ করতে বলেন, কিন্তু কেন?- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে এই তথ্যগুলো তুলে ধরেছিলেন। বিরোধী দলীয় নেত্রীর বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ও কল রেকর্ডের সূত্র ধরে। এ ছাড়া সংসদে মিথ্যা বা অযাচিত তথ্য দেওয়া হলে তার বিপরীতে প্রতিবাদের ভিত্তিতে বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হয়। তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিএনপি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিল। তাদের উকিল নোটিশ পাঠানোর আরও নজির রয়েছে। কিন্তু সংসদে উপস্থিত থেকেও প্রধানমন্ত্রীকর্তৃক (শেখ হাসিনা) উত্থাপিত অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি বিএনপি।’
ভিডিওতে আরও বলা হয়, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের দূত জিয়া ইস্পাহানি বাংলাদেশে আসেন। তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করার অনুরোধ করেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছিল। জিয়া ইস্পাহানি ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের প্রস্তাব দিলে শেখ হাসিনা তা প্রত্যাখ্যান করেন। যে ব্যক্তি ৩০ লাখ শহীদের রক্তের প্রতি উপহাস করার লক্ষ্য নিয়ে পাকিস্তান থেকে এসেছিল এবং প্রধানমন্ত্রী যার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বৈঠক করার উদ্দেশ্য কী ছিল? জিয়া ইস্পাহানির কার বা কাদের আহ্বানে বাংলাদেশে এসেছিল? আইএসআই ও বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্য ও স্বার্থ যে অভিন্ন এমন মনে না করার কোনো কারণ কি আছে? এ ছাড়া পাকিস্তানের আবেদন প্রত্যাখ্যানের পর ও বিডিআর বিদ্রোহের চারদিন আগে জামায়াত নেতা মুজাহিদ দেশত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। তাকে এয়ারপোর্ট থেকে ফিরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি কেন দেশের বাইরে যেতে চেয়েছিলেন?’
এতে আরও বলা হয়, ‘নির্বাচনে পরাজিত দলের সাধারণত প্রথমদিকে তেমন কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড থাকে না। অথচ বিডিআর বিদ্রোহের আগের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি সারাদেশ থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার নির্দেশ দেয় বিএনপি। পরাজয়ের গ্লানি ও হতাশা দূর করে মনোবল ফিরিয়ে আনা যদি উদ্দেশ্য হয়, সেক্ষেত্রে একমাত্র প্রভাবিত করতে পারেন দলের প্রধান তথা খালেদা জিয়া। অথচ ওই সভায় খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন না। বিকেলে বিএনপির সভা শেষ হয়, রাত থেকে শুরু হয় বিডিআর সদস্যদের ক্ষুব্ধ করার অপতৎপরতা।’
সজীব ওয়াজেদ জয়ের শেয়ার করা ওই ভিডিওতে বলা হয়, ‘হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এমন সদস্যদের মধ্যে সিপাহী মাঈন, সুবেদার মেজর গোফরান মল্লিকসহ অভিযুক্তদের বেশিরভাগ বিএনপির আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে যাওয়া ২২ জনকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৪ জনের চাকরির সুপারিশ করে ডিও লেটার ইস্যু করেছিলেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলার আসামী ও বিএনপির উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু। তার সঙ্গে পাকিস্তানী জঙ্গি বাহিনীর সম্পর্ক, আইএসআইয়ের ঘনিষ্ঠতা ও অস্ত্র পাচারে সংশ্লিষ্টতা ভারত ও বাংলাদেশ, উভয় দেশের তদন্তে উল্লেখ রয়েছে। বাংলাভাই ও জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর উত্থানে সরাসরি জড়িত এই আব্দুস সালাম পিন্টু। তাহলে কি আগে থেকেই বিডিআরে রিজার্ভ ফোর্স তৈরি রেখেছিল জঙ্গি গোষ্ঠী ও বিএনপি?’
ভিডিওতে বলা হয়, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পাঁচ বছর নৈরাজ্য, অরাজকতা, স্বেচ্ছাচার ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর কারণে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। মঈন উদ্দিন আহমেদসহ অনেক সেনাকর্মকর্তা তাদের অপকর্ম তুলে ধরেছিলেন। যা বিএনপির জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর ছিল। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহতদের বেশিরভাগ ২০০৮ সালের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। বিডিআর প্রধানসহ অনেককে অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিশেষ নির্দেশ ছাড়া এভাবে হত্যা মোটেই স্বাভাবিক নয়। তাই বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সমীকরণে বিএনপি-জামায়াতের ক্ষোভ, প্রতিহিংসা ও স্বার্থ কি উপেক্ষা করার মতো?’