সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার নামাজ পড়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব সৈয়দ এমদাদ উদ্দিন।
এসময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ অন্যান্যরাও জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সহকর্মীদের পক্ষ থেকে তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিকে, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সাভার দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে পরিবেশবিদ বারিক চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) পরিবারের পক্ষ থেকে একথা জানান তিনি।
পরিবেশবিদ বারিক চৌধুরী বলেন, সন্তান হিসেবে বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী লাশ দান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গণস্বাস্থ্য ও ঢাকা মেডিকেল তার প্রতি সম্মান রেখে লাশ ধরতে রাজি হয়নি। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তার লাশ দাফন করা হবে।
এর আগে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুপুর সাড়ে ১২টায় রাষ্ট্রীয়ভাবে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হেদায়াতুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এতে নেতৃত্ব দেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছোট ভাই বিগ্রেডিয়ার শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আপনাদের সবার হৃদয়ে তিনি আছেন, ব্যক্তিগতভাবেও কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি পরিবারের সবার জন্য বিশেষ সংবেদনশীল ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা এসময়ে ওনার মৃত্যু চাইনি। আমাদের পরিবারে তিনি মহীরুহ ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে আমরা তিন ভাই অংশগ্রহণ করেছিলাম। অসুস্থ অবস্থায়ও তিনি আমাদের সবার খোঁজ নিয়েছেন। তার মধ্যে কোনো লোভ ছিল না। তিনি পরিবারের জন্যও কোথাও সুপারিশ করতেন না।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহুবছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এর মধ্যে সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়। ১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ঔষধ নীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা ছিল।