শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি চলছে। তিন দিনের এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত।
এদিকে, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধে নাশকতা কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাতে ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবি। আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করছেন। এই তিনদিন তারা উন্নয়ন স্থাপনাসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।
শনিবারের মহাসমাবেশ পণ্ড এবং সেখানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল পালিত হয়েছে। এরপর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করবে বিএনপি ও এর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ। সড়ক-মহাসড়ক ছাড়াও নৌ ও রেলপথও অবরোধেও আওতায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
অন্যদিকে, সোমবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সারা দেশে তিন দিনের (৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে তিন দিনের এ কর্মসূচি কীভাবে পালন করা হবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানায়নি বিএনপি কিংবা অন্যান্য দলগুলো।
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো ধরনের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সারাদেশে প্রস্তুত রয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। আনসার, পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে বিজিবি। নাশকতার চেষ্টা হলে মাঠে পুলিশ ও র্যাব কঠোর অবস্থানে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পক্ষ থেকে এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান চোখে পড়েছে। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন তারা। এছাড়া ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকেও মাঠে দেখা গেছে।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে একজন পুলিশ সদস্য নিহত এবং ৪১ পুলিশ সদস্য আহত হন। এমন পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে।
অবরোধ চলাকালীন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও নাশকতার তথ্য থাকলে ৯৯৯-এ কল করে তথ্য জানাতে পুলিশ সদর দফতর থেকে বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, অবরোধে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষা করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র্যাব। দেশব্যাপী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব ফোর্সেসের ১৫ ব্যাটালিয়নের তিন শতাধিক টহল দল নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম চলবে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক দেশব্যাপী নিয়োজিত থাকবে র্যাব।