শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ডিমলায় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

ডিমলায় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

আব্দুর রাজ্জাক নীলফামারী ডিমলা প্রাতিনিধি :

ডিমলায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এক প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের মধ্য ছাতনাই ময়দানের ডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল ইসলামের গর্ভবতী স্ত্রী সুমনা আক্তার ( ৩৫) কে সন্তান প্রসবের জন্য ডিমলা সদরের মেডিনোভা ক্লিনিকে গত মঙ্গলবার সকাল ১১:৩০ টার দিকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির ৬ ঘন্টা অতিবাহিত হলে সুমনাকে অস্ত্র পাচার (সিজার) করার জরুরী হয়ে পড়লেও সিজারের নির্ধারিত ডাক্তার উপস্থিত না থাকায় রক্তশূন্যতার কথা বলে রোগীর লোকজনদের রক্ত সংগ্রহের কথা বলে সময় অতিবাহিত করতে থাকে। এভাবে চলতে থাকার এক সময় সুমনা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ক্লিনিকের লোক
জন বাচ্চা প্রসব (নরমাল ডেলিভারী) করানোর চেষ্টাকালে সুমনার মৃত্যু ঘটে। প্রসূতি সুমনার মৃত্যু হওয়ার বিষয় বুঝতে পেরে সুকৌশলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ের মধ্যে মৃত সুমনাকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রেরণ করেন। ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে প্রসবই সুমনার মৃত্যুর বিষয়টি প্রকাশ পায়। সুমনাকে ভর্তির পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে মত সিজার না করায় মেডিনোভা ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষের কর্তব্য অবহেলার অভিযুক্ত হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দায়ভার এড়ানোর জন্য ভর্তি রেজিস্টারে সুমনাকে ভর্তির সময় সকাল ১১:৩৫ এর স্থলে ওভার রাইটিং করে ৩ঃ৩৫ দেখানো হয়।

মেডিনোভা ক্লিনিকের দায়িত্বরত ম্যানেজার হাসিমুল ফারুক বলেন, প্রসূতি সুমনাকে ভর্তির সময় তার অবস্থা ভাল ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রসূতির শরীরে রক্তশূন্যতা পাওয়ায় তার রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ হওয়ায় ডিমলায় দুষ্প্রাপ্য তাই রোগীর লোকজনদের রক্ত জোগাড় করতে কথা বলা হলেও তারা রক্ত জোগাড় করতে পারেনি। তবে রাত ন’টায় রোগীর লোকজনের মধ্যে একজন আত্মীয়র রক্ত দেয়ার কথা ছিল।
প্রসূতী সুমনার দুলাভাই, আব্দুর রহিম বলেন, সুমনাকে ভর্তির সময় তার অবস্থা ভালো ছিল। মেডিনোভা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সময় মতো সিজার না করায় সুমনার মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইতিপূর্বেও মেডিনোভা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে একাধিক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে সিভিল সার্জন এর দপ্তর থেকে এটি বন্ধ করে দেয়া হয়। সিজারের পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও সিজারের অভিজ্ঞ সম্পন্ন ডাক্তার ও লোকজন না থাকা সত্ত্বেও আবারো অজ্ঞাত কারণে খুলে দেয়া হয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রাণঘাতী এ ক্লিনিকটি আবারো দ্রুত বন্ধ করে দেয়া হোক।

মেডিনোভা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার মোঃ মমিনুর রহমান জানান, আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ভর্তির সময় সুমনা নামের প্রসুতিটি ভালো ছিল। ভর্তির পরে রক্তশূন্যতার কারণে ঝিকুনি দেখা দিলে আমরা রোগীর লোকজনদের রংপুরে নেয়ার পরামর্শ প্রদান করি। আমাদের কোন গাফিলতি ছিল না।

এ ব্যাপারেডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুজ্জামানের কার্যালয় একাধিকবার গিয়েও দেখা না পেয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি রংপুরে মিটিংয়ে আছি পরে কথা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরানুজ্জামান
বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি তবে ক্লিনিক গুলো দেখা শোনা করে স্বাস্থ্য বিভাগের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জন । মৃতু প্রসুতির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নীলফামারী সিভিল সার্জন আব্দুর রাজ্জাক এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। এ বিষয়টি ডিমলার টি এইচ ও কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com