শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ১০:২৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সিমেক) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি পর্যায়ে নার্সিং কলেজ/প্রতিষ্ঠান “আনোয়ারা মুজাহিদ নার্সিং কলেজকে বিএসসি কোর্সে ২০ জন ছাত্র/ছাত্রী ভর্তির নির্দেশ প্রদান করেন। সেই অনুযায়ী সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলভিত্তিক “আনোয়ারা মুজাহিদ নার্সিং কলেজ”-এ ভর্তি হয় কার্যক্রম ও পাঠদান কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যান বিভাগে প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার আবেদন করেন বিষয়টি সমাধানের জন্য। তবে নানা জটিলতা এবং বারবার আবেদন সত্ত্বেও, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের রেজিস্ট্রেসনের ব্যবস্থা করেনি। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ মহামান্য হাইকোর্টের শরনাপন্ন হলে মহামান্য হাইকোর্ট “আনোয়ারা মুজাহিদ নার্সিং কলেজে” ভর্তি হওয়া ছাত্র/ছাত্রীদের পরীক্ষাগ্রহনের যাবতীয় ব্যবস্হা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে এই কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের বাদ দিয়ে উল্টো পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেন । এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এর আগে ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন নার্সিং শিক্ষা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত একটি স্মারক (নং: ৫৯.০০.০০০০.১৪৩.১৮.০০১.২৪.১১১) জারি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী ২০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
তবে নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রকাশিত পত্রে আনোয়ারা মুজাহিদ নার্সিং কলেজের নাম প্রথম নোটিশে থাকলেও বাদ পড়ে যায় দ্বিতীয় নোটিশে। হাওরবেষ্টিত পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা প্রসারে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করতে পারায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
এদিকে, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ৮ মে ২০২৫ তারিখে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
মহামান্য আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি কেন—এই প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, তারা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নেওয়ায় রেজিস্ট্রেশন ফর্ম প্রদানের সুযোগ নেই।
প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় পরিদর্শন শেষে শিক্ষার্থী ভর্তি অনুমোদন পেলেও, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন না থাকায় তারা কিছু করতে পারছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইসমাইল পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নির্দেশনা অনুসরণ করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা আজ পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত। আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও তাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ পরিবারের সদস্যরা প্রশ্ন তুলছেন—এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জবাব কে দেবে?
এদিকে সিলেটের সচেতন মহল ও অভিবাকদের দাবি এই কমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কথা ভেবে তাদের পরীক্ষার ব্যাবস্থা করা হয়।