শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রকাশ্যে এক গৃহবধূর উপর শুকনা মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে এক মুদি দোকানদারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধানশাইল দক্ষিণ বাজার এলাকায়। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর নাম ছাইফুল ইসলাম। তিনি দুপুরিয়া গ্রামের আমিনুল হকের ছেলে এবং ধানশাইল বাজারের মোশারফ মার্কেটের একজন মুদি দোকানের মালিক। ভুক্তভোগী মোছা. বিউটি আক্তার জানান, অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম, পশ্চিম ধানশাইলের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের দোকানঘরের সাবেক ভাড়াটিয়া ছিলেন। দুই বছর আগে লেনদেন নিষ্পত্তি করে তিনি দোকানটি ছাড়িয়ে নিলে সাইফুলের সঙ্গে তাদের বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। এ প্রসঙ্গে বিউটি বলেন,গত ১০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বাজারে কেনাকাটা শেষে ছাইফুলের দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি হঠাৎ তার স্বামী দেলোয়ার হোসেনকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। প্রতিবাদ করলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে সাইফুল তার দোকানে থাকা শুকনা মরিচের গুঁড়া বিউটির শরীরে নিক্ষেপ করেন এবং লাঠি হাতে মারধরের জন্য এগিয়ে আসেন। তবে আশে পাশে থাকা অন্যান্য লোকজন ও দোকানদাররা এগিয়ে এসে বিউটিকে রক্ষা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওই রাতেই মোছা.বিউটি খাতুন ঝিনাইগাতী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী বিউটি বলেন,মুদি দোকানদার সাইফুল বিনা কারণে আমাকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি ও লাঞ্ছিত করেছে। আমি এর বিচার চাই, তার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন,বাজারের মাঝখানে আমার স্ত্রীকে যেভাবে হেনস্থা করা হয়েছে,তা একজন নারীর জন্য চরম অপমানজনক। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। ঘটনার পর বিউটির শরীরে মরিচের গুঁড়া লাগায় প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হলে দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,তর্কবিতর্ক হয়েছিল ঠিকই,কিন্তু মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ বা শ্লীলতাহানির মতো কিছু করিনি। এব্যাপারে ধানশাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ বলেন,বাজারে যে ঘটনাটি ঘটেছে,সেটি সম্পর্কে আমি অবগত হওয়ার পর উভয় পক্ষের মধ্যে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেছি। তবে তারা বিষয়টি মেনে নেয়নি এবং আইনের আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান,বিষয়টি তিনি সামাজিকভাবে উভয় পক্ষকে আপস-মীমাংসার জন্য পরিষদে আসার আহ্বান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কোনো পক্ষই পরিষদে উপস্থিত হয়নি। এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল আমিন বলেন,এবিষয়ে অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা না হওয়ায় আইনানুগভাবে আদালতে প্রসিকিউশন প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।