রাজশাহী ব্যুরো :
রাজশাহী মোহনপুর উপজেলায় একটি কোল্ড স্টোরেজে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। কোল্ড স্টোরেজে গেটম্যানসহ সকল শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল।
বুধবার (৬ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টায় মোহনপুর উপজেলার সইপাড়া এলাকায় অবস্থিত দেশ কোল্ড স্টোরেজে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতরা প্রথমে ঢুকে দায়িত্বে থাকা দুই গেটম্যানকে কাপড় দিয়ে হাত মুখ, চোখ বেধে রাখে।একটি কক্ষে প্রায় ১৮ জন শ্রমিক ঘুমিয়ে ছিলেন। সেখানে ঢুকে তাদের হাত ও চোখ বেধে ডাকাতি শুরু হয়। এরপর শ্রমিকদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মেশিন রুমে গিয়ে মালামাল ও অফিস কক্ষের আলমারির ডয়াল ভেঙে নগদ টাকা নিয়ে নেয় তারা।সেখানে আবু তাহের নামে একজন শ্রমিক ছিলেন। ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে তিনি বলেন, রাত দেড়টার সময় আমি ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। ডাকাতরা এসে আকাশ নামে লোক খুঁজে। আমরা বলি, এখানে আকাশ নামে কেউ নাই। আর অমনি তারা অস্ত্র আমাদের গলায় ও বুকে ধরে। হাত ও চোখ বেধে ফেলে। তারা নগদ দেড় লাখ টাকা নিয়েছে।
আবু তাহের বলেন, ডাকাতরা ১৫/১৬ জন ছিল। আরও বাইরে হয়ত ছিল। কারও পায়ে জুতা সেন্ডেল ছিল না, সবাই কাঁদা পায়ে ছিল। লুঙ্গি ছিল, তারা নেংটি মেরেছিল। এ অবস্থায় ঢুকেছে। আমাদের মারধর করেনি। কিন্তু চোখ ও হাত বেধে ফেলে। আমাদের সবার মোবাইল নিয়ে একটা ব্যাগে রাখে তারা। কারও কারও ফোনের সিম খুলে ফেলে দেয়।
ডাকাতির খবর শুনে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে মালিক ও এলাকার আলু ব্যবসায়ীরা সেখানে আসেন। তারা আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানান। আলু লোড ও আনলোড বন্ধ রাখা হয়েছে।
আলু ব্যবাসায়ী এনতাজ আলী বলেন, আমার আলু ছিল। সকালে সেটে আলু পড়ার কথা, কিন্তু পড়েনি। এখানে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ভাঙচুর করেছে, টাকাপয়সা নিয়েছে ডাকাতরা।
কাজেম আলী নামে আরেক আলু ব্যবসায়ী বলেন, মেশিনের ক্ষতি হয়েছে। কখন মেশিন চালু হবে, তার ঠিক নাই। আমরা হতাশায় ভুগছি। বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ আছে৷ আলু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কোল্ড স্টোরেজের মালিক লুৎফর রহমান বলেন, আমরা অভিযোগ দেব। কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বজলুর রহমান বলেন, কারা করল বুঝতে পারছি না। তবে আমরা চাই, দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা দ্রুত মেশিন চালুর চেষ্টা করছি।
দেশ কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার আকবর হোসেন বলেন, ডাকাতরা শ্রমিকদের নগদ টাকা, মেশিন কক্ষের মালামাল ও অফিস কক্ষের গোপন আলমারির ডয়ার ভেঙে নগদ প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। কোল্ড স্টোরেজের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।