বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল লক্ষাধিক টাকা, কিন্তু বাস্তবে মাত্র ২২ হাজার টাকার মতো কাজ হয়েছে।
রাস্তা সংস্কারের নামে নতুন বালু বা মাটি আনা হয়নি। বরং রাস্তারই মাটি কেটে সামান্য সমান করে লোক দেখানো কাজের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টি-আর কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচা রাস্তা সংস্কারের জন্য সরকার থেকে বাজেট বরাদ্দ হয়। প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন লাভলু। কিন্তু কাজের গুণগত মান ও পরিমাণ দেখে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসী।
স্থানীয় মো. মাসুদ হাসান বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম এই প্রকল্পে রাস্তা ভালো হবে, কিন্তু কাজ দেখে মনে হয় শুধু নামেই হয়েছে। রাস্তার মাটি আগেরটাই টেনে সমান করেছে, নতুন বালু-মাটি কিছুই দেয়নি। এ রাস্তায় দৈনিক প্রায় দুই হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সরকারের কাছে দাবি, দ্রুত এই রাস্তা মেরামত করে দেওয়া হোক।”
একই গ্রামের ছোবাহান মিয়া জানান, “৫ জন শ্রমিক ৪ দিন ২২ হাজার টাকার কাজ করেছে। এখন কাদাযুক্ত রাস্তার কারণে আমরা চলাচল করতে পারছি না। আমরা সঠিক তদন্ত চাই।”
মন্ডলপাড়ার যুবক মো. মুনায়েম বলেন, “প্রকল্পের টাকা অনেক, কিন্তু কাজ খুব কম হয়েছে। নামমাত্র কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।”
স্থানীয় এক গৃহিণী, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানান, “মেম্বার সাহেব প্রথম দিন এসেছিলেন, পরে আর দেখিনি। শ্রমিকও খুব কম ছিল। ছেলে-মেয়ে স্কুলে যেতে পারে না, অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না—আমরা খুব কষ্টে আছি।”
মন্ডলপাড়ার মাসুম মিয়া বলেন, “আমরা কয়েকজন মিলে গিয়ে দেখি, বালু বা নতুন মাটি কিছুই আনা হয়নি। রাস্তার মাটি কেটে আবার সমান করে দিয়েছে। এটা স্পষ্ট টাকা আত্মসাৎ। আমরা বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে সঠিকভাবে রাস্তা সংস্কার চাই।”
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন লাভলুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহম্মেদ বলেন, “অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”