মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০২:৫২ অপরাহ্ন

হাতিরঝিলের পানি দুর্গন্ধহীন হবে অক্টোবরে

হাতিরঝিলের পানি দুর্গন্ধহীন হবে অক্টোবরে

ভিশন বাংলাঃ রাজধানীর নতুন বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে হাতিরঝিল সৃষ্টি হলেও বর্তমানে যানজটহীন যাতায়াতের স্থান হিসেবেই সেটি বেশি ব্যবহার হচ্ছে। হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি সব থেকে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অফিসগামী যাত্রীদের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে।

তবে গত বছর শুকনা মৌসুমে হাতিরঝিলের পানিতে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। নাকে কাপড় চেপেও গন্ধ থেকে মুক্তি মিলতো না। এরপর বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও নির্মূল হয়নি পানির গন্ধ। পানির এমন গন্ধ দূর করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) হাতিরঝিল সমন্বয় কর্তৃপক্ষ।

হাতিরঝিলে ৪টি স্থান থেকে ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল করে। গুলশান-১, এফডিসি মোড়, রামপুরা ব্রিজ ও পুলিশ প্লাজা। এসব স্থান থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।

গুলশান-১ নম্বর থেকে কারওয়ান বাজার এলাকায় যাতায়াত করেন মাহফুজা খানম নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, বাসে যাতায়াত করার থেকে ওয়াটার ট্যাক্সিতে যাতায়াত অনেক স্বাচ্ছন্দের। ধুলাবালি ছাড়া এই যাতায়াতে বর্তমানে সমস্যা পানির গন্ধ।

তিনি বলেন, বোট দ্রুত চললে গন্ধ বেশি নাকে লাগে। সকালে নাস্তা না করে গেলে বমি চলে আসে।

একই কথা বলেন নেয়ামুল নামের আর এক যাত্রী। তিনি বলেন, ধুলাবালি থেকে মুক্ত থাকার জন্য পানিপথ ব্যবহার করি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে পানিতে দুর্গন্ধ। বৃষ্টি পড়লে গন্ধ কিছুটা কমলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

দীর্ঘ এক বছর হাতিরঝিলের পানির দুর্গন্ধ নির্মূলের জন্য হাতিরঝিল সমন্বয় কতৃপক্ষ প্রথমে পানি পরীক্ষা করিয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে পানি পরীক্ষার ফলাফল হাতিরঝিল কতৃপক্ষ হাতে পায়। তারপরে তিন ধাপে লেকের পানি গন্ধমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। যা আগামী মাসে বাস্তবায়ন করার কাজ শুরু হবে।

হাতিরঝিলের পানি গন্ধমুক্ত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটা প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। প্রায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি গন্ধমুক্ত করা হবে এমনটা পরিবর্তন ডটকমকে জানিয়েছেন সমন্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জামাল আক্তার ভূঁইয়া।

তিনি জানান, রাসায়নিক, বায়োলজিক্যাল এবং এয়ার কম্প্রেসারের মাধ্যমে পানি গন্ধমুক্ত করা হবে।

জামাল আক্তার বলেন, হোটেল সোনারগাঁয়ের পেছনে কাঁঠালবাগান এলাকার বক্স কালভার্টের ময়লা পানি আর হাতিরঝিলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। ওই ময়লা পানি বদ্ধস্থানে শোধন করে পাম্পের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা হবে। এছাড়া হাতিরঝিলের লেকের সাথে যে সকল পয়:নিস্কাশন সংযোগ রয়েছে তা অতিদ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে।

তিনি জানান, হাতিরঝিলের পানি সুন্দর রাখার জন্য উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মেশিনের মাধ্যমে লেকের পানিতে বায়ু সঞ্চালন করা হবে। একই সাথে গন্ধ কমাতে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য পল্টুন বোটের মাধ্যমে এক ধরনের রাসায়নিক স্প্রে করা হবে।

গত বছর পানি থেকে গন্ধ আশার পর হাতিরঝিল লেকের পানি অস্ট্রেলিয়ার একটা ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। ওই ল্যাবের নির্দেশ মতো এই ধরনের উদ্যোগ হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষ নিয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

হাতিরঝিল সমন্বয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, চলতি বছরের আক্টোবর কিংবা নভেম্বর মাসের মধ্যে পানি গন্ধমুক্ত করার কাজ শুরু হবে। পানি গন্ধমুক্তকরণ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে। এখন অপেক্ষা শুধু পরিকল্পা মন্ত্রনালয় থেকে অর্থ ছাড়ের।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2014 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com