সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হরিপুরে গ্রামবাংলার ঝোপঝাড় হতে বিলুপ্তির পথে কুচফল ওয়াজের মাঠ কাপানো আর নারীদের খাট কাপানো হুজুর মুফতি মুহাম্মদ শফিকুজ্জামান দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ৮০০ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: রিজভী নির্বাচন কবে, সেই ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই : প্রেস উইং মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী
আগৈলঝাড়ায় যৌতুকের জন্য নেশাখোর স্বামী ও তার পরিবারের মধ্যযুগীয় নির্যাতন: হাসপাতালে গৃহবধু

আগৈলঝাড়ায় যৌতুকের জন্য নেশাখোর স্বামী ও তার পরিবারের মধ্যযুগীয় নির্যাতন: হাসপাতালে গৃহবধু

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি‍ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় যৌতুকলোভী নেশাখোর স্বামীর টাকার যোগান দিতে না পারায় স্ত্রী’কে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় ভাবে নির্যাতন চালিয়ে ঘরে আটক রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা আহত গৃহবধুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মৃত অহিদুল পাইকের মেয়ে মিনারা বেগম (২০) জানান, সম্পর্কের সূত্র ধরে পাশ্ববর্তি যবসেন গ্রামের জব্বার পাইকের ছেলে কাওসার পাইকের সাথে নয় মাস আগে বহু ধার দেনা করে সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিনারা জানতে পারেন যে, তার স্বামী একজন নেশাখোর। বিয়ের পর থেকেই স্বামী তার নেশা ও তার পরিবারের লোকজন মিনারাকে বিভিন্ন সময় ব্যবসা করার নামে যৌতুকের জন্য বাবার পরিবার থেকে টাকা এনে দিতে বলে। চার বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পরে হত দরিদ্র মিনারার মা তাছলিমা বেগমের কোন টাকা দেয়ার সামর্থ না থাকায় মিনারার উপর নেমে আসে স্বামী ও তার পরিবারের চরম নির্যাতন।
নেশার টাকা না পাওয়ায় নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে মিনারাকে মারধর শুরু করে স্বামী কাওসার। এ সময় শাশুরী দেলোয়ারা বেগম, শশুর জববার পাইক, দেবর লিটন পাইক ও ননদ ঝুমুর বেগমএ মিনারার হাত পা বেঁধে মুখ চেঁপে ধরে মধ্যযুগীয় কায়দায় অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন শেষে মুমূর্ষ অবস্থায় মিনারাকে ঘরের মধ্যে আটক করে রাখেন তারা।
স্থানীয়রা ঘটনা জেনে মিনারাকে উদ্ধারের জন্য তার মায়ের কাছে খবর পাঠালে তারা এসেও মিনারার শ্বশুর পরিবারের বাঁধার মুখে মিনারাকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে ওই দিন রাতে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সহিদুল ইসলাম পাইকের সহায়তায় মিনারার বাবার বাড়ির লোকজন মুমূর্ষ অবস্থায় মিনারাকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। মারধরের কারণে মিনারার হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
মিনারা আরও জানায়, গত ১৫ দিন আগে স্বামী কাওসার তাকে বেদম মারধর করলে মিনারা তার এক আত্মীয় বাসা ঢাকায় চলে যায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর কাওসার ও মিনারাকে ঢাকায় আনতে গেলে সেখানের এক শালিশ বৈঠকে মিনারর কাছে আর ‘যৌতুকের টাকা চাইবে না ও তাকে শারিরীক নির্যাতন করবেনা’ মর্মে ষ্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে কাওসার মিনারাকে স্বামীর এক আত্মীয়র বাসায় নিয়ে যায়। ওই বাসায় নিয়ে মিনারাকে সিঁকলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। সেখান থেকে মিনারাকে বাড়ি নিয়ে আসার পাঁচ দিনের মাথায় সোমবার মিনারাকে আবার মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায় স্বামী কাওসার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
মিনারাকে নির্যাতনের পর আটক রাখা ও উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সহিদুল ইসলাম পাইক বলেন, কাওসার ও তার পরিবারের এলাকায় অনেক দুর্নাম রয়েছে। মিনারার হত দরিদ্র পরিবার আর্থিক অসঙ্গতির কারণে আইনের আশ্রয়েও যেতে পারছে না বলেও জানান তিনি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, লোকমুখে নির্যাতনের খবর পেয়ে বিষয়টি খোঁজ খবর নেয়ার জন্য এসআই নাসির উদ্দিনকে গৃহবধুর সাথে কথা বলতে মঙ্গলবার হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে কোন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com