শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন
ডেস্ক নিউজ: শরীরের বিভিন্ন অংশে সোরিয়াসিস নামক চর্মরোগ হতে পারে। তবে মাথা, জিহ্বা, অণ্ডকোষের থলে, পিঠের ওপরের অংশ থেকে নিচের অংশ, ঘাড়, হাতের কনুই, আঙুল, তালু, পিঠ, নখ ও তার আশপাশে; পায়ের তালু, হাঁটু, হাত-পায়ের জয়েন্টে এটি বেশি দেখা যায়। এসব স্থান থেকে ক্রমাগত চামড়া বা আবরণ উঠতে থাকে। সোরিয়াসিস একেবারে নির্মূলযোগ্য রোগ নয়, তবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
সোরিয়াসিসের ধরন : বিভিন্ন ধরনের সোরিয়াসিস দেখা যায়। এদের লক্ষণও একেক রকম। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেই আসলে বুঝতে পারা যাবে কোন ধরনের সোরিয়াসিস হয়েছে।
পেক সোরিয়াসিস : এটি লালচে প্রদাহজনিত এক ধরনের সোরিয়াসিস, যাতে সিলভার বা সাদা রঙের মতো আবরণ বা আঁশ ওঠে। সাধারণত হাতের কনুই, হাঁটু, মাথা ও পিঠের নিচের দিকে এই সোরিয়াসিস দেখা যায়। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ রোগী এই পেক সোরিয়াসিসের অন্তর্ভুক্ত।
ইনভার্স সোরিয়াসিস : এ ধরনের সোরিয়াসিস সাধারণত লালচে রঙের হয়, যার কোনো আবরণ থাকে না। অনেকটা মসৃণ ও চকচকে ধরনের হয়। ঘর্ষণ, চুলকানি ও ঘামের কারণে যন্ত্রণা হতে পারে। সাধারণত মোটা চামড়ার গভীর ভাঁজযুক্ত ব্যক্তিদের এই সোরিয়াসিস বেশি হয়।
ইরিথ্রোডার্মিক সোরিয়াসিস : এটিও লালচে রঙের হয়, যা দেহের পুরো স্থানজুড়ে দেখা দিতে পারে। চামড়া উঠতে থাকে, প্রচণ্ড চুলকানি হয়। এর প্রভাবে শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা, নিউমোনিয়া, হার্টফেলিওরসহ নানা সমস্যা হতে পারে।
গাট্টেট সোরিয়াসিস : সাধারণত শিশু বা যুবক বয়সে এই সোরিয়াসিস দেখা দেয়। এটিও লাল ছোট ছোট স্পটের মতো হয়। পেক সোরিয়াসিসের মতো এই সোরিয়াসিসেও আবরণ ওঠে। এ ধরনের সোরিয়াসিসে যদি কেউ আক্রান্ত হয় এবং তাদেরও যদি শ্বাসতন্ত্রের অসুস্থতা, স্ট্রেপটোকক্কাল প্রদাহ, টনসিলে প্রদাহ ইত্যাদি থাকে, তবে এসব সমস্যা কিছুদিন অনুপস্থিত থেকে আবার ফিরে আসতে পারে বা পেক সোরিয়াসিসে রূপান্তরিত হতে পারে।
পাস্টুলার সোরিয়াসিস : এটা হলে চামড়া লাল হয়ে যায়, শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে সাদা পুঁজ বা ফোসকা তৈরি করে, আবরণ উঠতে থাকে। চারদিকে লালচে ধরনের চামড়া থাকে। তবে এটি দ্রুত ছড়ায় না এবং সহজে অন্যকে সংক্রমিতও করে না।
সোরিয়াটিক আর্থরাইটিস : এটি শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট আক্রান্ত করতে পারে। হাতের আঙুলের ছোট ছোট জয়েন্ট আক্রান্ত হতে পারে এবং হাত বিকৃতও করতে পারে।
করণীয়
টেনশনমুক্ত থাকার চেষ্টা এমনকি প্রয়োজনে মেডিটেশন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
রোগকে মোকাবিলা করার মতো দৃঢ় মনোবল রাখা জরুরি। প্রয়োজনে অন্যান্য আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে সমস্যা শেয়ার করুন। এতে মানসিক চাপ কমবে।
স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস তৈরি করতে হবে। অতিরিক্ত ফ্যাট, চর্বিযুক্ত, উত্তেজক খাবার পরিহার করতে হবে।
ধূমপান, অ্যালকোহল, ক্ষারীয় সাবান, অস্বাস্থ্যকর পোশাক ও পরিবেশ বর্জন করতে হবে।
নিয়মিত গোসল করুন।
অতিরিক্ত চুলকানি ঠিক নয়, এটা ত্বকের জন্য খুব ক্ষতিকর।
প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, সেবা নিন ও সুস্থ থাকুন।