সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
পাবনা থেকে বায়েজিদ বোস্তামী: পাবনা সদর উপজেলার চর বলরামপুর গ্রামে দোয়া মাহফিলের খিচুরী খেয়ে ১১ শিশুসহ ২৭ জন নারী পুরুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত তারা ভর্তি হয়। এ ঘটনায় এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর খবর শোনা গেলেও ঠিক কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অসুস্থ্য রোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের চরবলরামপুর গ্রামের মরহুম ঈমান আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গত শুক্রবার (০৫ জুলাই) দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে স্বজনরা। দোয়া মাহফিল শেষে উপস্থিত এলাকাবাসীর মাঝে তাবারক হিসেবে খিচুরী বিতরণ করা হয়। অনেকেই সেই খিচুরী বাড়িতে নিয়ে যান এবং শনিবার সকালেও সেই খিচুরী খায়। শনিবার রাত থেকে তাদের প্রথমে জ্বর পরে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এরপর একে একে অসুস্থ্য রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
রবিবার দুপুর পর্যন্ত ১১ জন শিশু সহ মোট ২৭ জন অসুস্থ্য রোগীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, এ ঘটনায় ওই গ্রামের সোহেল হোসেনের মেয়ে পাবনা শহরের শহীদ আহমেদ রফিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার সুখী (১৪) মারা গেছে বলে জানায় স্থানীয়রা। তবে তার পরিবারের দাবি. কি কারণে সুখী মারা গেছে, তা তারা জানেন না।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: নীতিশ কুমার কুন্ডু জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারনেই তারা অসুস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতালে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা বর্তমানে অনেকটাই ভাল আছে।
পাবনা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শাফিকুল হাসান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ৪৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৭ জনই বলরামপুর এলাাকার। হঠাৎ করে একই এলাকার এত সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হওয়ায় তারা অনুসন্ধানে জেনেছেন এদের অধিকাংশই মিলাদের তবারকের খিচুরী খাওয়ার পরে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, খিচুরী খেয়ে নাকি অন্য কারনে এতো বেশী সংখ্যক মানুষ হঠাৎ একসাথে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে তা পরীক্ষার মাধ্যমে নিরুপনের জন্য ঢাকা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দলের সোমবার (০৮ জুলাই) পাবনায় আসার কথা রয়েছে। ইত্যমধ্যে আক্রান্ত্রদের মল, রক্ত ও খিচুরীর নমুনা সংগ্রহ করে অধিকতর পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ। তিনি জানান, তাৎক্ষনিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই গ্রামে অস্থায়ীভাবে একটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করেছেন।