সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা পৃথিবী স্থবির হয়ে পড়েছে। থেমে গেছে দেশের মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা। বেকার হয়ে পড়েছে লক্ষ লক্ষ খেটে খাওয়া মানুষ। অতিকষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে এই মানুষগুলো।
তেমনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ১নং ব্লকের জেপি হাইস্কুল থেকে জেপি ইট ভাটা (হাবিব নগর) পর্যন্ত প্রায় ৪০০ পরিবার যার অধিকাংশই রিক্সাচালক,ভ্যান চালক,দিনমজুর।
গত প্রায় একমাস সরকারের ঘোষণা যানবাহন চলাচল বন্ধ। এরপরই বেকার হয়ে পড়ে সবাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোন ত্রাণ বা সহযোগিতা
পৌঁছায়নি এই এলাকায়। অথচ জগন্নাথপুর এলাকার সবচেয়ে গরীব এলাকা হিসেবে খ্যাত এই জেপি স্কুল পাড়া।
স্থানীয়দের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান আলাল এই এলাকায় ভোট কম পাওয়ার দরূণ এখানে কোন সাহায্য করেনা।
স্থানীয় বাসিন্দা জরিনা বলেন,আমার ছেলে জহিরুল মিস্ত্রির কাজ করে। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা খুব কষ্টে আছি। কুলসুম জানান,তার স্বামী ভ্যান চালক কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। হামিদা আক্তার জানান,তিনি প্রাইভেট পড়িয়ে চলতেন প্রাইভেট বন্ধ হওয়ায় খুব কষ্টে আছেন। সবচেয়ে কষ্টকর পরিস্থিতি এলাকার রিক্সাচালক মংলুর। তিনদিন যাবৎ তার পরিবার শুধু আলু সেদ্ধ করে খেয়ে ছিল।
তিনদিন পর এলাকায় এক শিশুর মৃত্যুর মিলাদের দাওয়াতে ভাত দেখে তিনি হাওমাও করে কেঁদে ওঠেন। এসময় তিনি বলেন প্রয়োজনে আত্মহত্যা করবো তবুও কারো কাছে হাত পাতবো না।
তার কান্না দেখে সেলিম বিডিআর কিছু চালের ব্যবস্থা করে দেন। এভাবেই আলু সেদ্ধ খেয়ে দিন চালাচ্ছে এলাকার আরও ২/৩টি পরিবার।
এব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার জামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এই এলাকা অত্যন্ত হতদরিদ্র এলাকা। কেউ কেউ এলাকার মুড়ি খেয়ে দিন পার করছে। চেয়ারম্যানকে বললে তিনি বলেন কোন বরাদ্দ নেই।
কয়েক দফায় আমি ২০টি ত্রাণ পেয়েছিলাম সেগুলো ২০টি পরিবারের মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে আলাল চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করছি।