শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সব মিলিয়ে ৪ দিন চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র সারা দেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবিতে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত নরসিংদীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা: ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইনে দুই প্রতিষ্ঠানের মালিককে জরিমানা এনসিপির পক্ষে নরসিংদীতে এড. শিরিন আক্তার শেলি এর গণসংযোগ হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে চট্টগ্রাম এয়ার পোর্ট ভিআইপি রোডে চলছে অবৈধ ব্যাটারী চালিত টমটম “মানছে না ট্রাফিক আইন” সৎ মা-ভাইদের হামলায় বাবার বাড়ি থেকে বিতাড়িত অসহায় মেয়ে ও তার মা.. জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা ঘুরছে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ মা হারা, এতিম অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থী মতিউরের স্বপ্ন– ডাক্তার হতে চাই দেবিদ্বারে ঈদের ছুটিতে ও থেমে নেই পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম
তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৫৭ হাজার হেক্টর জমি বাদ পরেছে

তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৫৭ হাজার হেক্টর জমি বাদ পরেছে

এক সময়কের স্রোতস্বিনী তিস্তানদীএখন ধু ধু বালুচর আন্তর্জাতিক নীতিমালাকে অগ্রাহ্য করে ভারত অভিন্ন নদী তিস্তায় নিজের অংশে বাঁধ দিয়ে অনেকটা মেরে ফেলেছে বাংলাদেশ অংশকেতিস্তা এখন এক মরা নদীতে পরিণত হয়েছে, ফলে গত চার বছরে তিস্তা প্রকল্পের সেচসুবিধা থেকে বাদ পড়েছে ৫৭ হাজার হেক্টর জমি

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালেও ৬৫ হাজার হেক্টর জমি তিস্তা প্রকল্পে সেচের আওতায় ছিল। এবার পেয়েছে মাত্র হাজার হেক্টর জমি। রংপুরদিনাজপুর অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষককে এখন গুনতে হবে বাড়তি টাকা

এক সপ্তাহ আগে চলতি মৌসুমে বোরো সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু করে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা সেচ প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে বোরো মৌসুমে রংপুর, নীলফামারী দিনাজপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচসুবিধা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেচ দেয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। পানির অভাবে ২০১৬ ২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার মাত্র হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে

সূত্রটি আরও জানায়, দিনাজপুর রংপুরের কমান্ড এলাকার ৫৫ হাজার হেক্টর জমি সেচ কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ডিমলা, জলঢাকা, নীলফামারী সদর কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে সেচের আওতায় রাখা হয়েছে। তবে উজানের প্রবাহ পাওয়া গেলে সেচের জমির পরিমাণ রংপুর দিনাজপুরে বাড়ানো যেতে পারে বলে দাবি সংশ্লি¬ষ্ট সূত্রের

তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বোরো মৌসুমে অনেক জমিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের সেচ দিতে হবে। এতে কৃষকদের হেক্টর প্রতি বাড়তি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হবে

পানি উন্নয় বোর্ড সূত্রমতে, বোরো আবাদের জন্য তিস্তা সেচ প্রকল্পে কমপক্ষে ১০ হাজার কিউসেক পানি প্রয়োজন। কিন্তু এর তিন ভাগের এক ভাগও পাওয়া যাচ্ছে না

তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী সাংবাদিকদের জানান, উজানের প্রবাহ দিন দিন কমে আসায় তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় ¤পূরক সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না

পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প সূত্র জানায়, সেচ প্রকল্প এলাকায় সেচ দেয়া এবং নদীর প্রবাহমাত্রা ঠিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানির স্বাভাবিক প্রবাহমাত্রা থাকা প্রয়োজন ২০ হাজার কিউসেক পানি। শুধু সেচ প্রকল্প চালাতেই প্রবাহমাত্রা থাকা প্রয়োজন ১৪ হাজার কিউসেক এবং নদীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন চার হাজার কিউসেক পানি। সেখানে শুস্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ কিউসেক

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৩৯৪ শস্যবছর থেকে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের ১২টি উপজেলায় ব্যাপকভাবে আউশ আমন উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তিস্তার পানি দিয়ে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০০৬২০০৭ শস্যবছর থেকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বোরো মৌসুমেও সেচ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। আমন মৌসুমে মোট সেচযোগ্য ৭৯ হাজার ৩৭৯ হেক্টর এলাকার প্রায় পুরোটাই সেচের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বোরোর ক্ষেত্রে পানির দুষ্প্রাপ্যতায় সেচসাফল্যের চিত্র একেবারেই হতাশাজনক

শুকনো মৌসুমে ভারতের প্রত্যাহারের পর যে সামান্য পরিমাণ পানি তিস্তা নদীতে পাওয়া যায়, তার সবটুকুই সেচ চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হচ্ছে। কারণে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজ থেকে ৯৭ কিলোমিটার বিস্তৃত তিস্তা নদীতে এক কিউসেক পানিও থাকছে না। কারণে তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অংশের এই বিশাল পরিমাণ নদীগর্ভ পরিণত হচ্ছে বালুচরে। তিস্তা ব্যারাজ এলাকার অপর অংশ নদী শুকনো মৌসুমে এভাবেই মারা যাচ্ছে

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সার্কেল) মো. হারুণ অর রশিদ বলেন, এখন তিস্তায় কোনোপ্রবহমানপানি নেই। তাই এবার তিস্তার পানি দিয়ে শতভাগ সেচ দেয়া সম্ভব হবে না। তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে এখন যে পানি আছে তা যথেষ্ট নয়

 

ডিমলা প্রতিনিধি, নীলফামারী

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com