মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ অপরাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি
‘‘মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার’’ দেয়া বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় প্রধান মন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পর আওতায় ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো নিশ্চিন্তে মাথা গোজার নিশ্চিত ঠাঁই হিসেবে পাকা ঘরে বসবাস করলেও প্রকল্পের বাসিন্দারা রয়েছেন বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকল্পে সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআই) মো. মোশারফ হোসেন প্রকল্পের বাসিন্দাদের খাঁজ খবর নিতে গেলে ওই সময়ে প্রকল্পের সকল বাসিন্দারই তাদের পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটের কথা জানিয়েছেন।
প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ১লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষ দুই ক বিশিষ্ট ১৫টি পাকা বসত ঘরসহ বারান্দা নির্মান করা হয়েছে আগৈলঝাড়া উপজেলায়। গত ২০ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগী পরিবারের কাছে নতুন পাকা ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেছেন। এর আগে প্রথম পর্যায়ে ১লাখ ৭১হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষ উপজেলায় ৩৬টি ঘর নির্মাণ করে তা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
রত্নপুর ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামের বাস্তবায়িত প্রকল্পর আওতায় ঘরের বাসিন্দা স্থানীয় বেল্লাল বেপারীর স্ত্রী তিন সন্তানের জননী সুমি বেগম জানান, সরকারী ঘর পেয়ে তাদের পরিবার অনেক খুশি। এজন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় এমপি আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন- সরকারী ঘরে সকল সুবিধা থাকলেও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে তারসহ পুরো প্রকল্পের বাসিন্দাদের।
সুমি বেগম আরও বলেন- বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে হেটে গিয়ে নলকুল থেকে তাদের খাবার পানি আনতে হয় প্রতিদিন। দিনে দুই থেকে তিন বার পানি আনতে হয় তারমতো প্রত্যেক মহিলাদের। তারমতো অনেকেই দিনে কয়েকবার পানি আনতে যাওয়ায় নলকূপের মালিকেরাও অনেক সময় মুখ ভার করার পাশাপাশি গালমন্দও করেন। তাদের গালমন্দ শুনেও বাধ্য হয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের।
একইভাবে গৈলা ইউনিয়নের সেরাল গ্রামের প্রকল্পর আওতাধীন বাসিন্দারও জানিয়েছেন তাদের খাবার পানির তীব্র সংকটের কথা। সেখানে সরকারী ঘরে বসবাস করা ১৪টি ঘরের অর্ধশতাধিক বাসিন্দারা জানান, ঘরে ওঠার সময়ে তাদের বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন। প্রতি ঘরে আলাদা মিটার ব্যবহার করছেন তারা। তবে খাবার পানির জন্য কোন নলকূপ নেই তাদের। বাড়ির ঝি-বউদের দূর থেকে পানি এনে তা খেতে হয় তাদের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদল সেরনিয়াবাত জানান, সরকারের খাস জায়গায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও ১৪টি ঘরের লোকজনের বাড়ি থেকে যাতায়াতের কোন রাস্তা ছিল না। পরিবারের লোকজনের কথা চিন্তা করে মন্ত্রী মর্যাদায় স্থানীয় এমপি জাতির পিতার ভাগ্নে আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র তার কোটার কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ১৪টি ঘরের লোকজনের যাতায়াতের জন্য রাস্তা নির্মানের ব্যবস্থা করেছেন। ২লাখ ৬৪হাজার টাকা ব্যয়ে ৫শ ফিট দীর্ঘ, ১০ফিট চওড়া এবং সাড়ে ৫ফিট উচ্চতার এই রাস্তাটি নির্মান করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। ১৪টি ঘরের বাসিন্দাদের বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটের কথাও স্বীকার করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আবুল হাশেম প্রকল্পের আওতায় বসবাস করা বাসিন্দাদের পানির তীব্র সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন উপায়ে বাসিন্দারে জন্য শিঘ্রই গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমনন্ত্রীর বাস্তবায়িত প্রকল্পের বাসিন্দাদের বিশেষ করে একই স্থানে অনেকগুলো পারিবার বসবাসের সুযোগথাকলে এই প্রকল্পের জন্য গভীর নলকূপ বরাদ্দ করলে সকল বাসিন্দারা উপকৃত হতেন।