পেনসিলভানিয়ায় প্রতারণার টাকায় গরুর খামার ও সুপার শপ গড়েন গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট দাবি করা এনায়েত করিম চৌধুরী। গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিন্টো রোড এলাকায় সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির সময় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে গ্রেফতার করলে পরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয় সেই মামলায় তাকে প্রথম দফায় ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি পুলিশ। তার কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় মোস্তফা আজাদকে।
প্রথম দফার রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত বুধবার তাকে আবার আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি নিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দ্বিতীয় দফায় তার সঙ্গে রিমান্ডে নেওয়া হয় মোস্তফা আজাদকেও।
বিগত সরকারের আমলে যারা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিলেন, সেসব হেভিওয়েটদের ওপর থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি এটেছিলেন এনায়েত। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য তিনি তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গেও যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ তালিকায় আছেন পলাতক সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ অনেকে
বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট দাবি করা এনায়েত করিম চৌধুরী প্রতারণা নেওয়া শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এসব টাকায় তিনি বিদেশে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গরুর খামার, সুপার শপ ও ‘জার্ভিয়া ট্রেডিং’ নামে দুবাইয়ে তার একটি আবাসন কোম্পানি রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য বাংলাদেশি কাজ করছেন। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দেশ থেকে নানাভাবে হাতিয়ে নেওয়া শত শত কোটি টাকা তিনি হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে এমন অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন। এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, এনায়েত মূলত ঠান্ডামাথার একজন প্রতারক। তার টার্গেট ছিল দুর্নীতিবাজ ও বিপদগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তি। সিআইএ-এর এজেন্ট পরিচয়ে তাদের লোভনীয় প্রস্তাব দিতেন। প্রতিশ্রুতি দিতেন খুব সহজেই তাদের সমস্যার সমাধান দেবেন বা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবেন। এজন্য তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন। এরপর কখনো মধ্যস্থতার মাধ্যমে তাদের কাজ করে দিতেন আবার কারও সঙ্গে প্রতারণায় জড়াতেন। মানুষকে সহজেই আশ্বস্ত বা ফাঁদে ফেলায় তার এ সিদ্ধহস্ত অন্য একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসায় তিনি ভাড়াটে কর্মীর মতো ব্যবহার হয়ে থাকতে পারেন।