সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেক্স: কিশোরদের ক্ষেত্রে গাঁজা সেবন তাদের মস্তিষ্কের বিকাশমান গঠনকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এমনটি দাবি করছে একটি কানাডিয়ান গবেষণা।গবেষণাটিতে দেখা গেছে যে, অ্যালকোহল পানকারীদের চাইতে গাঁজাসেবী কিশোরদের চিন্তা করার ক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি এবং আচরণে অনেক বেশি নেতিবাচক প্রভাব পরে। ইউনিভার্সিটি অব মন্ট্রিয়লের একদল গবেষক কিশোরদের গাঁজা সেবন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।এই গবেষণায় ৪ বছর যাবত ১৩ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৮শো কিশোরদের ওপর বিভিন্ন পরীক্ষা চালানো হয় এবং তাদের ওপর লক্ষ্য রাখা হয়।
অ্যালকোহল পান করা এবং মাদক গ্রহণ করা বিশেষ করে গাঁজার মতো মাদক, এই অল্প বয়সী জন্য তা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন সমস্যার কারণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে কোনো কিছু শেখা, মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো জ্ঞানগত ক্ষমতা তাদের সমস্যা তৈরি হয় আর তার প্রভাব পরে স্কুলের পড়ালেখায়।এই গবেষণায় দেখা গেছে এইসব সমস্যা মদ বা অ্যালকোহলের চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় গাঁজা সেবন। আর তার স্থায়িত্বও অ্যালকোহল পানের বিপরীতে বেশি।
গাঁজা সেবনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কি কি?
কানাডার ৩১টি ভিন্ন ভিন্ন স্কুলের কিশোর বয়সীদের এক বছরের অ্যালকোহল পান এবং মাদক সেবনের অভ্যাসের বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করা হয়।কম্পিউটার ভিত্তিক কগনেটিভ টেস্টের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কের দক্ষতা প্রতি বছর স্কুলে পরীক্ষা করা হয়।
মস্তিষ্কের বিকাশ
যদিও গবেষণায় অ্যালকোহল বা মদের ব্যবহারের তুলনায় গাঁজা ব্যবহারের মাত্রা কমছিল , তবুও ২৮% কিশোর-কিশোরী এই ব্যবহারের সাথে অভ্যস্ত ছিল।এই তুলনাটি ছিল অন্তত ৭৫ শতাংশ কিশোর বয়সীদের সাথে যারা মাঝে মধ্যেই মদ্যপান করে থাকে।
মন্ট্রিয়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর প্যাট্রিসিয়া জে কোনরড এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। তিনি শুরুতে ভেবেছিলেন যে, কৈশোরে মস্তিষ্কে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে অ্যালকোহল।কিন্তু তার পরিবর্তে গবেষণায় দেখা গেল যে, সেই সব কিশোর-কিশোরীদের কগনেটিভ টেস্ট বা জ্ঞানীয় পরীক্ষায় ত্রুটির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে যারা কিনা গাঁজা সেবন করে, এমনকি এই মাদকটি ছেড়ে দেবার পরেও প্রভাব থেকেই যায়।এই প্রভাব থেকে যায় তাদের স্মৃতি শক্তি, যুক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে।
প্রফেসর কোনরড বলেন, “যাদের মস্তিষ্কের গঠন প্রক্রিয়া এখনো চলছে. গাঁজা তাতে ক্ষতিকর প্রভাব রেখে চলেছে।”তার মতে, যত পরে গিয়ে এই মাদক গ্রহণ করা সম্ভবততই ভালো।একইসাথে তিনি বলেন যে, গবেষণাটির প্রাপ্ত ফলাফল মাদক প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দিয়েছে।
মাদক
যুক্তরাজ্যে গাঁজা-কে সবচেয়ে অবৈধ মাদক হিসেবে গণ্য করা হয়। এটির আসক্তি এবং ব্যবহার বিশেষ করে কৈশোরে নানাধরনের মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।বিশেষজ্ঞদের মতে, গাঁজা সেবন ছেড়ে দিলে ঘুমের সমস্যা বা মেজাজ হারানোর মতো মানসিক সমস্যার লক্ষণ থেকে মুক্তি মিলবে। এই গবেষণা পত্রটি আমেরিকান জার্নাল অব সাইক্রিয়াটিতে প্রকাশিত হয়েছে।