শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ! টাকার বিনিময়ে বিদ্যুতের তার খাম্বা মিটার এনে দেন ইলেকট্রিশিয়ান জুলিয়ান!
রোগীদের প্রতি আরো বেশি আন্তরিক ও ব্রতী হোন : রাষ্ট্রপতি

রোগীদের প্রতি আরো বেশি আন্তরিক ও ব্রতী হোন : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কম খরচে হয়রানিমুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি আজ নগরীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ কমিউনিটি অফথ্যালমোলজিক্যাল সোসাইটির ৭ম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভাষণকালে একথা বলেন।

তিনি বলেন, অহেতুক পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হয়রানির শিকার হয়ে রোগীরা যাতে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি চিকিৎসা পেশাকে অত্যন্ত সম্মানজনক ও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখবো রোগীদের প্রতি আরো বেশি আন্তরিক ও ব্রতী হোন। অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যে পরিমাণ ফি আদায় করেন তা সাধারণ মানুষের ক্ষমতার বাইরে। তাই আপনাদের চিকিৎসা ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে রোগীরা যাতে প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন, মানুষ বিভিন্ন রোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য সৃষ্টিকর্তার পরই ডাক্তারদের উপর ভরসা করে থাকেন। তাই, তাদের আস্থার জায়গাটি অক্ষুণ্ন রাখা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। তাছাড়া আপনারা আজকে যে অবস্থানে আছেন, সেখানে পৌঁছাতে সাধারণ মানুষের অবদানও কিন্তু কম নয়। কারণ তাদের ট্যাক্সের টাকায়ই মেডিক্যাল কলেজের খরচ জোগানো হয়। তাই, তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেয়া আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে আমি মনে করি।

চিকিৎসা মানুষের অন্যতম প্রধান একটি চাহিদা। জনগণের এ চাহিদা পূরণে বর্তমান সরকারের সর্বাত্মক প্রয়াসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, ডাক্তার-নার্স নিয়োগ, উন্নত যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ তৃণমূল থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সার্বিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জেলা সদরের বাইরে, এমন কি ঢাকা বা বিভাগীয় শহরের বাইরে পদায়ন হলেই ডাক্তার-নার্সগণ বদলীর তদবির শুরু করেন। আর বদলী হতে না পারলে কোন রকমে সময় পার করার চেষ্টা করেন। এতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণ কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা নিয়েই আমাদের দেশ। আপনাদের অনেকেই গ্রাম থেকে এসেছেন। তাই গ্রামের সাধারণ মানুষের কথা ভুলে গেলে চলবে না। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। যাকে যে জায়গায় পদায়ন করা হবে সে জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং তা আন্তরিকতার সাথে করতে হবে। হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে যতটুকু সেবা দেয়া সম্ভব তা সবটুকু দিতে হবে। চিকিৎসা নিতে আসা জনগণ যাতে অহেতুক কোন হয়রানির শিকার না হয় তাও নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন এলক্ষ্যে কাযকর অবদান রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর চক্ষু চিকিৎসা প্রদানের জন্য চক্ষু ক্যাম্প পরিচালনা একটি উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় মাধ্যম। কিন্তু এ ধরণের ক্যাম্পে চোখ অপারেশনের পর বেশ কিছু রোগী অন্ধত্বের শিকার হয়েছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত। এ ধরণের ক্যাম্প পরিচালনায় আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে মনিটর করার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, অন্ধত্ব মানব জীবনের একটি চরম অভিশাপ। অন্ধত্ব এখন শুধু সামাজিক সমস্যা নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত। সমাজের এই হতভাগ্য দৃষ্টিহীন মানুষদের অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের চক্ষু বিশেষজ্ঞগণের মহামিলন ঘটেছে। আমি মনে করি এই সম্মেলন তাঁদের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে নিজেদের মধ্যে পেশাগত বন্ধন ও সামাজিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পাবে। আমি আশা করি এই সম্মেলনের আলোচনা ও উপস্থাপিত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ থেকে আপনারা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি আমাদের দেশের চক্ষু চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। রোগ নির্নয় ও প্রযুক্তিগত কৌশলের ক্ষেত্রেও নতুন নতুন দিকনির্দেশনা বেরিয়ে আসবে। চক্ষু চিকিৎসার ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে আমাদের সক্ষমতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধি পাবে।

রাষ্ট্রপতি সম্মেলনের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করে আশা প্রকাশ করেন যে, ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করতে দেশের সকল নাগরিক নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, অফথ্যালমোলজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ, অল ইন্ডিয়া অফথ্যালমোলজিক্যাল সোসাইটির সাবেক সভাপতি ডা. দেবাশীষ ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত চক্ষু চিকিৎসক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ইনামুর রহমান চৌধুরী অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com