শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন
অন্তর রায় প্রিন্স, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : চিকিৎসক না হয়েও নিজের নামের আগে যুক্ত করেছেন সেই পদবি। এই পরিচয় ব্যবহার করে চেম্বার খুলে দেদারসে ব্যবসাও করে যাচ্ছেন।
সাইনবোর্ড ও ভিজিটিং কার্ডেও তিনি ডাক্তার। প্রতিনিয়ত ভুল চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়ে নিরীহ রোগীদের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করেও বহাল তবিয়তে আছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ার ভুয়া ডাক্তার কাইমুল ইসলাম।
বছরের পর বছর ধরে ডাক্তার সেজে এভাবেই নিরীহ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন বলে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঠাকুুরগাঁঁও সদর উপজেলার রুহিয়া বাজারে চেম্বার খুুলে বসেছেন নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া কাইমুুল ইসলাম। সর্বরোগের ডাক্তার কাইমুুল ইসলাম এখানে থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে যাচ্ছেতাই ভাবে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসায় ব্যবহার করছেন উচ্চক্ষমতার অ্যান্টিবায়োটিক। দীর্ঘ দশ-পনের বছর ধরে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে এভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি।
স্থানীয়রা আরও জানান, বছরের পর বছর ধরে কাইমুুল ইসলাম এ রকম প্রতারণা করে এলেও কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে তার ভুল চিকিৎসায় অহরহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিরীহ রোগীরা। মূলত রুহিয়া সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের কম্পাউন্ডার ছিলেন তিনি, সেই জন্যই তিনি এমন অভিনব কৌশল করার সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, আমার পাঁচ (৫ ) বছর বয়সের ছেলের জ্বর, ডাক্তার কাইমুল ইসলামের কাছে গেলে তিনি এক হাজার টাকার ওষুধ লিখে দেন কিন্তু রাতে জ্বর না কমে উল্টো বেড়ে যায় সাথে ডায়রিয়া শুরু হয় । হাসপাতালে নিয়ে যাই, সেখানকার চিকিৎসকরা তার দেওয়া ঔষুধ খেয়ে ক্ষতি হয়েছে বলে জানান। কাইমুলের দেয়া সব ঔষধ পরিবর্তন করে হাসপাতালে ভর্তি করায় আমার ছেলেকে।
চিকিৎসা দেওয়ার বৈধতা নেই স্বীকার করে কথিত ডাক্তার কাইমুল ইসলাম বলেন, সমস্যা হলে আর লিখবো না। “এম ডি এফ” এর অর্থ জানতে চাইলে, কথিত ডাক্তার কাইমুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল ডিপ্লোমা এন্ড ফার্মেসি৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, রুহিয়া সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার রিপন রায় জানান, কথিত ডাক্তার কাইমুল ইসলাম তার নামের সামনে ডাক্তার লিখতে পারবেনা শুধু তাই নয়, প্রেসক্রিপশন লিখতে পারবেনা ভুয়া ডাক্তার কাইমুল ইসলাম৷
বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির, রুহিয়া থানা সভাপতি মো: তাহেরুল ইসলাম বলেন, কাইমুল ইসলাম অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারবেনা ৷ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে উত্তরে বলেন, রুহিয়ার মত গোটা দেশে এভাবেই চলছে, কেউ দেখেনা তাই প্রতিকার নাই৷
ঠাকুরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ডাঃ মোঃ আজিজুল হক (চপল) কে বিষয়টি সম্পর্কে জানালে, তিনি জানান, এম বি বি এস/বিডিএস এবং তাদের নিচে যারা তারা ছাড়া, ডাক্তার কেউ লিখতে পারবেনা৷ প্রেসক্রিপশন লিখারও কোন সুযোগ নেই৷