শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এবং ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর, খুলনা এর সভাপতি ড. মুনতাসীর মামুন বলেছেন, আমরা যখন স্বাধীন হই তখন বলা হতো নারী ধর্ষিত হয়েছে ৮ থেকে ১০ লাখ। এটি আমি রেডিওতে শুনেছি। আস্তে আস্তে এটা ২ লাখে নেমে আসে। আমার গবেষণায় এসেছে যে নারী ধর্ষিত হয়েছে ৫ লাখের ওপরে। এবং হাইকোটের রায়ে এই পরিমাণটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের সাতোর ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া মাঝাপাড়া এবং নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষেত্র গণহত্যার স্মৃতিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে একথা বলেন।
তিনি বলেন, আসলে ২ লাখ বা কম নারী ধর্ষিত হলে অপরাধের মাত্রা কম বা আমরা লজ্বিত। আমি বলবো এই লজ্বিত হওয়ার কথা তো আমাদের। কারণ আমরা তাদের রক্ষা করতে পারিনি। তাহলে আমাদের এতো বীরত্ব কথা বলার কি। আমরা প্রত্যেকটি জেলার একটি জরিপ করছি। এবং জেলার জরিপ করার পরে যে ভয়াবহ অবস্থা দেখতে পাচ্ছি তাতে আমাদের শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষের উপরে চলে যায়।
ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, বাংলাদেশ একটি অদ্ভুদ দেশ। যেখানে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিও আছে। পৃথিবীর কোথাও কিন্তু এ রকম নেই। কারণ স্বাধীনতা হয়ে গেলে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আর থাকে না। বিএনপি করলে বা জামায়াত করলে কেউ মুক্তিযোদ্ধা থাকে এটি আমি বিশ্বাস করি না। যদি আপনি বলেন আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম কিন্তু আপনি মুক্তিযোদ্ধা থাকলে তো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল ছাড়া অন্য দল করতে পারেন না। তাহলে মুক্তিযোদ্ধা থাকেন না।
সাতোর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম শেখের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি এবং গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র, খুলনা এর কোর্স পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মাহবুবর রহমান, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. চৌধুরী শহীদ কাদের, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক সায়েদ আলী, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর পঞ্চগড় জেলা সভাপতি নুরুল হুদা, অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান সরকার, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক মো. কালিপদ সাহা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ গোবিন বর্মন, মাঝাপাড়া গণহত্যার গবেষক মো. মিজানুর রহমান ডাব্লু, গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক আজাহারুল আজাদ জুয়েল এবং প্রভাষক প্রশান্ত কুমার সেন।
পরে সন্ধ্যায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষার্থীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।