শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ! টাকার বিনিময়ে বিদ্যুতের তার খাম্বা মিটার এনে দেন ইলেকট্রিশিয়ান জুলিয়ান!
সুপার সাইক্লোন আম্ফান: আঘাতের বড় অংশই পড়বে সুন্দরবনের ওপর

সুপার সাইক্লোন আম্ফান: আঘাতের বড় অংশই পড়বে সুন্দরবনের ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে। এবার সৃষ্টি হওয়া আম্ফান খুবই তীব্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র ১৮ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়টি সাধারণ থেকে সুপার সাইক্লোনে (ক্যাটাগরি ১ থেকে ক্যাটাগরি ৫-এ উন্নীত) রূপ নিয়েছে।

ঝড়ের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে, ভারত ও বাংলাদেশ উপকূলজুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরবনের ওপর এটি আছড়ে পড়তে পারে। হয়তো আবারও সুন্দরবনই এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকাতে পারে।

আবহাওয়া বার্তায় বলা হচ্ছে, ঝড়ের সম্ভাব্য গতিমুখ ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এবং বাংলাদেশর পশ্চিম উপকূলভাগ। অর্থাৎ ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে বাংলাদেশের খেপুপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। এখন পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গে দিঘা বা তার একটু পূর্বে সুন্দরবনের কাছে আঘাত হানবে বলা হলেও এটি বিশাল আয়তনের হওয়ায় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। আর এর মূল ঝাপটার একটি বিরাট অংশ সুন্দরবনের ওপরে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থলভাগে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড়টি যদি গতি পরিবর্তন না করে তবে সুন্দরবনের পশ্চিম ভাগ অর্থাৎ সুন্দরবনের ভারতীয় অংশ এবং বাংলাদেশর সাতক্ষীরা ও খুলনার অংশ জুড়ে এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে। সে ক্ষেত্রে বরাবরের মতো সুন্দরবনই আবারও এই ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা মোকাবেলা করবে।

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতের বেশির ভাগই সুন্দরবন ঠেকিয়েছিল। না হলে আমাদের জীবন ও সম্পদের আরো বেশি ক্ষতি হতে পারত।

সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে অনেক বেশি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগরে অনেক বেশি তাপমাত্রা ছিল, যা ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সৃষ্টি ও শক্তি সঞ্চয়ে ভূমিকা রেখেছে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেট্রোলজির বিজ্ঞানী ড. রক্সি ম্যাথিউ কল এ সম্পর্কে কালের কণ্ঠকে এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, মে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ বঙ্গোপসাগরে ধারাবাহিকভাবে ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বজায় ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত হিসেবে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ঘূর্ণিঝড়টিকে ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হতে সহায়তা করেছে। এর ধ্বংসক্ষমতা ব্যাপক। তবে ধ্বংসাত্মক রূপটি নির্ভর করবে কোথায়, কখন কী অবস্থায় এটি আঘাত হানছে।

পরিবেশবাদী উন্নয়ন সংগঠন ‘জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট’ ক্লীনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ভয়াবহতা এবারও সুন্দরবন ঠেকিয়ে দেবে। প্রকৃতপক্ষে সুন্দরবনের গাছ বাতাসের গতি রুখে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে। এ গাছগুলো বাতাসের ধাক্কায় একে-অপরের সঙ্গে মিশে প্রতিরক্ষা ব্যূহ তৈরি করে। যে কারণে বাতাসের প্রবল চাপ কমে যায়।’

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সম্ভাব্য আঘাতের সময়টি অমাবশ্যার আগে। তখন যদি নদীতে জোয়ার থাকে, তবে ব্যাপক মাত্রায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি হলে সুন্দরবনের নদ-নদী, খালে পানির উচ্চতা বাড়বে। ব্যাপক অঞ্চল নোনা পানিতে ডুবে যেতে পারে।

জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্লাইমেট চেঞ্জ বিষয়ের প্রফেসর সাইমন অঙ কালের কণ্ঠকে এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত মহাসাগরে উষ্ণতার পরিমাণ অনেক বেড়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী সৃষ্টি হওয়ার সময়ও সমুদ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল, যা এবার আম্ফানের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com