রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
জন্মের ছয় মাসের মাথায় বাবলীকে অ্যাসিড পান করিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল তার বাবা। এর ১৭ বছর পরে বুধবার রাতে অবশেষে আত্মহত্যা করলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী সেই মেহিয়া আক্তার বাবলী।
বাবার সেই অ্যাসিড আক্রমণ থেকে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছিলেন বাবলী। তবে শারীরিকভাবে দারুণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন – কথা বলতেও পারতেন না ঠিকমত। তবে নানা মানুষের সহায়তায় ভর্তি হতে পেরেছিলেন টাঙ্গাইলের নামকরা একটি স্কুলে।
বাবলীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেয়ার ঘটনা এক সময় মানুষ জেনেছিল গণমাধ্যমের কল্যাণে। আলোড়িত তুলেছিল ঐ ঘটনা।
কন্যাসন্তান হওয়ার তথ্য জেনে জন্মের আগে থেকেই বাবলীর মা’কে গর্ভপাত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন বাবলীর পিতা। তবে তা হয়নি। শেষ পর্যন্ত কন্যাসন্তান হিসেবে জন্ম হওয়ার ছয় মাসের মাথায় অ্যাসিড দিয়ে বাবলীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।
ওই সময় এ নিয়ে মামলা হলে কিছুদিন পলাতক থাকেন বাবলীর পিতা। কিন্তু পরে ঐ মামলার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাবলী এবং তার মা এরপর আর সে ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক রাখেননি।
অ্যাসিড হামলায় ঐ সময় বাবলীর একটি কান নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়াও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় গলা, জিহ্বা ও মুখ।
ঐ সাংবাদিক জানান বাংলাদেশ অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল বাবলী। শারীরিক বিকলঙ্গতার জন্য প্রায়ই অন্যান্য ছাত্রীদের বিদ্রুপের শিকার হতে হতো তাকে।
পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা বাবলী আত্মহত্যা করেছেন। তবে কেন এই ঘটনা ঘটেছে, ময়নাতদন্তের পরে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক জানান, ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা করতেন বাবলী। তবে আট-দশ মাস আগে শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাকে ছাত্রীনিবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বাবলীর মা পারুল বেগম জানান বহিষ্কার হওয়ায় ভারতেশ্বরী হোমসের একজন শিক্ষার্থী ও তার মায়ের সাথে মির্জাপুরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন বাবলী। সেই শিক্ষার্থী ও তার মা বাবলীকে মৌখিকভাবে তিরস্কার করতো বলে জানান পারুল বেগম।
সূত্র : বিবিসি বাংলা