শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন
গত নভেম্বরে নদীবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম খুলনায়। সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলো। যশোর থেকে পড়তে আসা কৃষি প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলছিলেন, ‘আমরা এখানে খুব ভালো আছি। আমাদের কোনো সেশনজট নেই। বাড়িতে বাবা-মাকে আমাদের জন্য কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয় না। কোনো মারামারি নেই।’ পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ফয়সাল আহমেদ বলছিলেন, ‘শিক্ষকেরা এখানে শিক্ষার্থীদের রাজনীতির কাজে লাগান না। শিক্ষকেরা সংগঠন করলেও কোনো দলাদলি নেই।’ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেদিন একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হন, সেদিনই তিনি জানেন, কোন সালের, কোন মাসের, কোন সপ্তাহে তাঁর শেষ বর্ষের ফলাফল প্রকাশিত হবে। বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এই পাঠদান-প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারে।খুলনা শহর দিয়ে বয়ে গেছে ময়ূর, ভৈরব ও রূপসা নদী। ময়ূর নদের ওপর যেখানে দৃষ্টিনন্দন ছোট সেতুটি হয়েছে তার উত্তর দিকে নদের প্রায় মাঝবরাবর একটি সীমানাপ্রাচীর স্থাপনা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন অথবা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তা বন্ধ করা প্রয়োজন। নদ রক্ষায় স্থানীয় ব্যক্তিদের ভূমিকাও খুব জরুরি। খুলনা শহরের নদী প্রাণময়। রূপসায় একের পর এক পণ্যবাহী জাহাজ চলছে।
খুলনা শহরের সড়কগুলো বেশ প্রশস্ত। কোথাও যানজট চোখে পড়ল না। বড় বড় সড়কের মোড়ে মোড়ে দৃষ্টিনন্দন সৌধ নজর কাড়ে। খুলনায় বিচিত্র প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। পারশে, ভেটকি, বাগাড়সহ প্রচুর সামুদ্রিক মাছ খুবই সহজলভ্য। সোয়া দুই কেজি ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল। যদিও সাত হাজার টাকা দাম চাচ্ছিলেন বিক্রেতা। মাছ ব্যক্তিগতভাবে কিনেছেন অনেকেই। বরফ দিয়ে দুই-তিন দিন মাছ ভালো রাখার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। খুলনা থেকে প্রচুর মাছ বিদেশে রপ্তানিও হয়। মৎস্যশিল্পে সমৃদ্ধ খুলনা।খুলনা শহরে আছে প্রায় দেড় শ বছরের পুরোনো মিষ্টির দোকান ‘ইন্দ্রমোহন সুইটস’। এখনো কলা পাতায় সন্দেশ দেওয়া হয়। মিষ্টি কেজি হিসেবে বিক্রি হয় না। সংখ্যা হিসেবে মিষ্টি বিক্রি হয়। প্রতিদিন যে মিষ্টি তৈরি হয়, সেই মিষ্টি ওই দিনই শেষ হয়। বাসি মিষ্টি বিক্রি হয় না।খুলনার সঙ্গে রেল-সড়ক-নৌ—তিন ধরনের যোগাযোগ থাকার কারণে এখানকার উন্নতি বেশ ত্বরান্বিত হয়েছে। খুলনা থেকে মোংলা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাসের দাবিসংবলিত ব্যানার টাঙানো।
খুলনা থেকে শাবিব হোসেন