শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৩ অপরাহ্ন

এক বছর পেছাল শিক্ষার নতুন কারিকুলাম

এক বছর পেছাল শিক্ষার নতুন কারিকুলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত নতুন সমন্বিত নতুন কারিকুলাম (শিক্ষাক্রম) বাস্তবায়ন আরো এক বছর পিছিয়ে গেল। এর ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষেও বর্তমান কারিকুলামে বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের বিতরণ করা হবে। তবে আগামী শিক্ষাবর্ষে নতুন কারিকুলাম মাধ্যমিক স্তরের ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এবং প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণিতে ১০০টি প্রতিষ্ঠানে নতুন কারিকুলাম পাইলটিং (পরীক্ষামূলক) করা হবে। পরের বছর এই শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর হাতে বই দেওয়া হবে। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রাথমিক উইং এর তৈরি করা কারিকুলাম পাইলটিং হবে। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনসহ, এনসিটিবি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সভা শেষে এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে আগামী বছর পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রমে কার্যক্রম চালানোর আলোচনা হয়েছে। এখন কার্যবিবরণী লেখা হলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। প্রথমে ঘোষণা দেওয়া হয়েছেল চলতি বছর থেকে কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে বই পাবে। কিন্তু করোনার কারণে তা এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী বছর থেকে তা বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি; মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বই পাওয়ার কথা ছিল। আর ২০২৩ সালে অষ্টম শ্রেণি ও ২০২৪ সালে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রমের বই দেওয়ার কথা। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের বই দেওয়ার কথা। প্রাথমিক কারিকুলামের পাইলটিং বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) প্রফেসর ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, প্রাথমিকের কারিকুলাম প্রাথমিক উইং তৈরির সিদ্বান্ত হয়েছে। আমরা আগে যে কারিকুলাম তৈরি করেছিলাম সেটাই পালটিং করা হবে। অন্যরা যেটা করেছিল সেটা বাস্তবায়ন হবে না। এ নিয়ে আগামী ২ মে মিটিং আছে। অভিযোগ রয়েছে, তিন বছর ধরে দেশের বাস্তবতা যাচাই ও চাহিদা বিবেচনা করে এনসিটিবির প্রাথমিক উইংয়ের কর্মকর্তারা কারিকুলাম বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত করে। কিন্তু হঠাৎ করে আগের রূপ রেখার যোগ্যতা ও শিখনফল (লার্ণিং আউট কাম) বাদ দিয়ে ‘অভিজ্ঞতা ভিত্তিক’ জটিল একটি যোগ্যতার ছক (মেট্রিক্স) জুড়ে দেওয়া হয়ছ। মন্ত্রণালয় অনুমোদিত প্রাথমিক স্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত উপেক্ষা করে ইউনিসেফ, প্লান বাংলাদেশ ও ব্র্যাকের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় সমন্বিত শিক্ষাক্রম রূপ রেখাটি তৈরি করা হয়েছে। আর এনসিটিবির প্রাথমিকের উইং প্রধানকে বাদ দিয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) প্রফেসর মশিউজ্জামানকে। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) অর্থে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের শিক্ষাক্রম রূপরেখা তৈরি করা হলেও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে গত ৪ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘শিক্ষার নতুন কারিকুলামে জটিলতা বাড়ার আশংকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই নড়ে চড়ে বসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে পুরাতন কারিকুলামে বই ছাপার টেন্ডার ডাকতে বলেছে এনসিটিবিকে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com