শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন

আগৈলঝাড়ায় চাহিদানুযায়ি বিদ্যুৎ পাবার পরেও চলে লোড শেডিং বিদ্যুৎ অফিসের মুখস্ত উত্তর ‘‘জাতীয় গ্রীডে সমস্যা”, ‘‘তারে গাছ পড়ে লাইন ফল্ট করেছে”

আগৈলঝাড়ায় চাহিদানুযায়ি বিদ্যুৎ পাবার পরেও চলে লোড শেডিং বিদ্যুৎ অফিসের মুখস্ত উত্তর ‘‘জাতীয় গ্রীডে সমস্যা”, ‘‘তারে গাছ পড়ে লাইন ফল্ট করেছে”

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ

চাহিদানুযায়ি বিদ্যুতের বরাদ্দও আছে; তার পরেও প্রতিদিনই থাকে উপজেলার সর্বত্রই কম বেশী লোড শেডিং। কোন কোন এলাকায় দিনে গড়ে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা চলে লোড শেডিং। ভুক্তভোগীরা বিদ্যুৎ বিলের সাথে অফিসের দেয়া ফোন নম্বরে ফোন দিলে কোন সময় তাদের দেয়া নম্বরে কথা বলা যায় না, বিজি করে রাখা হয় সেই নম্বরটি। ফোন ধরেন না কেউ। বিভিন্ন পরিচিত কর্মচারীদের ফোন দিয়ে লোড শেডিং এর কারণ জানতে চাইলে তাদের মুখস্ত উত্তর ‘‘জাতীয় গ্রীডে সমস্যা”, না হয় ‘‘তারে গাছ পড়ে লাইন ফল্ট করেছে”।

কোন রকম বাতাস বৃষ্টি ছাড়াই চলে লোড শেডিং এর আওতাধীন বরিশালের আগৈলঝাড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের আওতায় গ্রাহকদের সাথে এমন তালবাহানা। লোড শেডিং এর আওতায় দিনে কখনো কখনো উপজেলা সদরেও ৪-৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না।

সদরের ব্যবসায়ি গ্রাহক স্বপন বালীসহ রাজিহার গ্রামের ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা জানান, প্রতিদিন আছরের আযানের পরে বিদ্যুৎ চলে যায়, আসে সকাল ৯টা থেকে ১০টার পরে। আবার সন্ধ্যা সাতটার পরে গিয়ে বিদ্যুৎ আসে রাত ১০টা সাড়ে দশটায়। আবার মাঝেমধ্যে রাত এগারোটার পরেও দেয়া হয় লোড শেডিং। এভাবে বিদ্যুৎ যাওয়া আসার কারনে কম্পিউটার, ফ্রিজ, টিভিসহ বিদ্যুতায়িত মেশিন ও যন্ত্রপাতিতে সুষ্ঠুভাবে কোনো কাজ করা যায় না। লোড শেডিং এর কারণে নিত্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও নস্ট হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজের মাছ মাংস পচে, প্রচন্ড গরমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রাহকদের। বিদ্যুতের অভাবে সদরের ব্যবসা-বাণিজ্যও এখন মন্দা যাচ্ছ বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়িরা। অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন।

বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন আগৈলঝাড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নসহ উজিরপুর উপজেলার সাতলা এলাকাসহ মোট ১২শ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনে বর্তমানে ৪৭ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এরমধ্যে ৩৯হাজার ৫শ গ্রাহক আবাসিক, ৪ হাজার ৫শ গ্রাহক বানিজ্যিক এবং ৩হাজার গ্রাহক রয়েছেন সিআই, শিল্প এবং সেচের। এসকল গ্রাহকের অনুকুলে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১০ মেগাওয়াট। সূত্র মতে, চাহিদানুযায়ি প্রতিদিন ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীড থেকে আগলঝাড়া বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কেন বিভিন্ন এলাকায় চলে টানা লোড শেডিং? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারছেন না বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা।

কান্দিরপাড় পল্লী বিদ্যুতের সাব-স্টেশনের লাইন টেকনিশিয়ান সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, চাহিদা অনুযায়ি বিদ্যুৎ পাচিছ আমরা, উপজেলায় কোন লোডশেডিং নেই। মাঝে মাঝে ঝড়-বৃষ্টি, লাইনে গাছ পরে তা সরানোর জন্য জনবল সংকটরে কারনে দেরী হওয়ায় বিদ্যুৎ পেতে অনেক সময় একটু দেরী হয় আর কি। তিনি আরও বলেন, এতবড় সঞ্চালন লাইনের মধ্যে মাত্র ২শ কিলোমিটার লাইন মাত্র ২বছর আগের। বাকী লাইনগুলো দীর্ঘ দিনের পুরানো। তাই পুরানো লাইনে সমস্যা মোকাবেলায় পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সমস্যা লেগেই থাকে।

আগৈলঝাড়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম অসিত কুমার সাহা এটা সাময়িক সমস্যা বলে দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, মাদারীপুর গ্রীডে আগৈলঝাড়া সাব-ষ্টেশনে যে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় সেটি প্রায়ই সমস্য দেখা দেয়। খুব শিঘ্রই এর সমাধান হবে বলে আশা করেন তিনি।####

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com