শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ! টাকার বিনিময়ে বিদ্যুতের তার খাম্বা মিটার এনে দেন ইলেকট্রিশিয়ান জুলিয়ান! নবান্ন উৎসব ঘিরে জমে উঠেছে কালাইয়ে মাছের মেলা
টি-টুয়েন্টিতে অজিদের বিপক্ষে টাইগারদের প্রথম জয়

টি-টুয়েন্টিতে অজিদের বিপক্ষে টাইগারদের প্রথম জয়

স্পোর্টস ডেস্ক: ব্যাট হাতে তেমন দাপট দেখাতে না পারলেও বল হাতে একের পর এক চমক দেখিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

করোনা মহামারির এই সময়ে বাংলাদেশে আনন্দে ভাসিয়েছে টাইগাররা। বাংলাদেশের এই জয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অবিশ্বাস্য এক জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। ছোট্ট পুঁজি নিয়েও মিরপুরে তারা অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিয়েছে ২৩ রানে।

অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য মাত্র ১৩২ রানের। সফরকারি দলকে চাপে ফেলতে স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম বলেই সাফল্য এনে দেন মাহেদি হাসান, বোল্ড করেন অ্যালেক্স কারেকে (০)।

পরের ওভারে নাসুম আহমেদের ঘূর্ণি ডেলিভারি কিছুটা এগিয়ে খেলতে গিয়ে জশ ফিলিপ (৫ বলে ৯) হন স্ট্যাম্পিং। বল পেয়ে চোখের পলকে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন নুরুল হাসান সোহান।

তৃতীয় ওভারে আরও এক উইকেট। এবার সাকিব আল হাসান নিজের প্রথম বলেই বোল্ড করেন ময়েসেজ হেনড্রিকসকে (১)। বাঁহাতি এই স্পিনারের বল সুইপ করতে গিয়ে নিজেই টেনে নিয়ে উইকেট হারান হেনড্রিকস। ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।

বিপদ বুঝে খেলার ধরন পাল্টে ফেলেন ম্যাথু ওয়েড আর মিচেল মার্শ। ঝুঁকিপূর্ণ শট না খেলে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা, রানরেটের কথা না ভেবে।

শেষ পর্যন্ত তাদের ৪৫ বলে ৩৮ রানের জুটিটি ভেঙেছেন নাসুম। যদিও খুব ভালো বল ছিল না, পেছনের দিক দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। বাজে সেই বলটিতে কি মনে করে ব্যাট লাগিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড (২৩ বলে ১৩)। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ নেন মোস্তাফিজুর রহমান।

এরপর নাসুমের আরও এক উইকেট, এবার অ্যাশটন অ্যাগার। সেই উইকেট পেতেও অবশ্য ভাগ্য কাজে দিয়েছে টাইগার বাঁহাতি স্পিনারের। বল পিছিয়ে খেলতে গিয়ে নিজের পায়েই স্ট্যাম্প মারিয়ে দেন অ্যাগার। হিট উইকেট হন ৭ করে।

দলের ব্যাটসম্যানদের এই আসা যাওয়ার মিছিলে একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন মিচেল মার্শ। শেষ পর্যন্ত সেই কাঁটাও সরিয়েছেন দারুণ বোলিং করা নাসুম। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শরিফুলের দারুণ এক ক্যাচ হন মার্শ (৪৫ বলে ৪৫)। ৮৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে তখনই।

১৯তম ওভারে এসে অ্যান্ড্রু টাই আর অ্যাডাম জাম্পাকে জোড়া শূন্যতে ফেরান শরিফুল। তার আগের ওভারে মোস্তাফিজ এক্সট্রা কভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়েছিলেন অ্যাশটন টার্নারকে (৮)। শেষ ওভারে স্টার্ককে বোল্ড করেছেন কাটার মাস্টার ফিজ, তাতেই অস্ট্রেলিয়া এক বল বাকি থাকতে অলআউট ১০৮ রানে।

এর আগে অসি বোলাররা সেভাবে হাত খুলে খেলতে দেননি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদেরও। নাইম শেখ, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা রান পেলেন বটে। কিন্তু সেটা ঠিক টি-টোয়েন্টি ধাঁচের ব্যাটিংয়ে নয়। শেষদিকে আফিফ হোসেন ধ্রুব কিছুটা চালিয়ে খেলে ৭ উইকেটে ১৩১ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন দলকে।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই অসি বোলারদের চাপের মুখে ছিল বাংলাদেশ। আত্মঘাতী হয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। রীতিমত হাসফাঁস করছিলেন উইকেটে, শেষ পর্যন্ত নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

জশ হ্যাজলেউডের বলটি বানিয়ে মারতে গিয়েছিলেন, কাট করে সেটি নিজের উইকেটেই টেনে আনেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলের ঘটনা। সৌম্য ৯ বলে করেন মাত্র ২ রান।

সৌম্য ফেরার পর নাইম শেখ মোটামুটি ভালো খেলছিলেন। মিচেল স্টার্ককে ফ্লিক করে বড় এক ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আবার রানের গতি আটকে যায় নাইমের।

সেই চাপ থেকেই বোধ হয় অ্যাডাম জাম্পাকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন সপ্তম ওভারের শেষ বলে। বলটি মিস করে হন পরিষ্কার বোল্ড, ২৯ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় নাইম করেন ৩০ রান।

এরপর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন কিছুটা। যদিও তেড়েফুরে খেলতে পারেননি তারাও। ৩২ বলের জুটিতে তারা যোগ করেন ৩৬ রান।

ডাউন দ্য উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। হ্যাজলউডের বলে দৌড়ে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন ময়েচেস হেনড্রিকস। মাহমুদউল্লাহর ২০ বলে সমান রানের ইনিংসটিতে ছিল একটি ছক্কার মার।

এরপর নুরুল হাসান সোহানও উইকেটে টিকতে পারেননি। অ্যান্ড্রু টাইয়ের এক ডেলিভারি অনেকটা সামনে এগিয়ে গিয়ে ওয়াইডের কাছাকাছি জায়গা থেকে তুলে মারেন তিনি, ৪ বলে ৩ রান করে হন মিচেল মার্শের ক্যাচ।

৮৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১৪.৩ ওভারও পার হয়ে যায়। উইকেটে ভরসা হয়ে ছিলেন সাকিব। তিনিও অবশ্য টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে পারেননি। তবে স্লো উইকেটে তার ৩৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে গড়া ৩৬ রানের ইনিংসটিকে একেবারে খারাপ বলা যাবে না। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বোল্ড হন হ্যাজেলউডের এক স্লোয়ারে।

শামীম হোসেন পাটোয়ারী আন্তর্জাতিক আঙিনায় এবারই প্রথম কঠিন বোলিংয়ের মুখে পড়েন। স্টার্কের টানা দুই বলে দুই করে চার রান নিলেও পরে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হন তরুণ এই ব্যাটসম্যান (৩ বলে ৪), ওপরে যায় লেগস্ট্যাম্প।

আফিফ হোসেন শেষ ওভারের শেষ বলে এসে আউট হয়েছেন সেই স্টার্কের বলেই। এবারও বোল্ড, ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৩ রান করে ইনিংসের শেষ বলে উইকেট হারান আফিফ।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন হ্যাজলেউড। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রানে ৩টি উইকেট নেন এই পেসার। স্টার্কের শিকার ২টি।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com