মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের মণিরামপুরে তিন বছরের মেয়েকে রশিতে ঝুলিয়ে হত্যার পর নিজ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন পিয়া মণ্ডল (২২) নামের এক গৃহবধূ। শনিবার (৭ আগস্ট) উপজেলার কুলটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী কলেজ শিক্ষক কণার মণ্ডলকে আটক করেছে পুলিশ।
স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মেয়েকে হত্যার পর পিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে পার্শ্ববর্তী অভয়নগর উপজেলার দত্তগাতী গ্রামের ভগিরথ মন্ডলের মেয়ে পিয়ার সঙ্গে কণার মন্ডলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর মেয়ে কথার জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে কণার মন্ডলের পরকীয়া প্রেম নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকত। এরই জেরে মাস খানেক আগে শিশুসন্তান কথাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায় পিয়া মন্ডল। ভালো হওয়ার আশ্বাস দিয়ে স্ত্রী পিয়াকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন স্বামী কণার মন্ডল।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় জানান, পিয়া মন্ডলের স্বামী কণার মন্ডল স্থানীয় মশিয়াহাটি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক। তারা কুলটিয়া গ্রামের ফাল্গুন মন্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শনিবার বিকেলে ভাড়া বাড়ির রান্না ঘর থেকে দুই দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
পিয়া মন্ডলের মা শিপ্রা মন্ডল বিলাপ করে বলেন, জামাই কণারকে বহুবার ভালো হতে বলেছি। কথা শোনেনি। মেয়ে তাকে বিপথ থেকে ফিরে আসতে বললেই মারধর করত। স্বামীকে পরকীয়া থেকে ফেরাতে না পেরেই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পিয়া মন্ডলের ভাই চন্দন মন্ডল জানান, এক প্রতিবেশীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন কণার মণ্ডল। এ নিয়ে বোন পিয়ার সঙ্গে কণার মণ্ডলের কলহ চলছিল। শুধু এখানে নয়, কণার মণ্ডলের একাধিক পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে।
মণিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েকে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে মারার পর পিয়া আরেক রশিতে আত্মহত্যা করেছেন। স্বামীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কারণে প্রায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। এ নিয়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কলেজশিক্ষক কণার মন্ডলকে আটক করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে এবং সার্বিক তদন্ত করে আত্মহত্যার পুরো রহস্য উন্মোচন হবে।