রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
আগামী ৯ জানুয়ারি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা, নির্বাচন কমিশন সচিব আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তরের মেয়র এবং ৩৬ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র এবং কাউন্সিলর উভয় পদেই নির্বাচন হবে সিটি করপোরেশনের বাকি মেয়াদের জন্য।
মূলত নির্বাচন কমিশন সচিবের এই ঘোষণার পরই নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়ছে। একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, ঢাকা উত্তরের ১৮ টি এবং দক্ষিণের ১৮ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা নতুন নির্বাচন করবেন। কাজেই তাঁরা বাকি মেয়াদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। তাঁদের নির্বাচন করতে হবে পূর্ণ মেয়াদের জন্য।
আইনজীবীরা বলছেন, এগুলো নতুন ওয়ার্ড, কাজেই নির্বাচন কোনো অবশিষ্ট মেয়াদ পূরণের নির্বাচন নয়। সিটি করপোরশন আইন নিয়ে গবেষণা করেন এমন একজন আইনজীবী মেয়র নির্বাচন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন।
তাঁর মতে, মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর নতুন মেয়র নির্বাচন হবে বাকি মেয়াদের জন্য। অর্থাৎ এটি একটি উপনির্বাচন। এই উপ-নির্বাচনে নতুন ১৮ টি ওয়ার্ড অন্তভুক্ত হতে পারে না। কারণ এর আগের মেয়র ওই ১৮টি ওয়ার্ড ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছিলেন। কাজেই উপ-নির্বাচনে সীমানা পরিবর্তন ও আইনের সাম্যতার নীতির পরিপন্থী হবে।
এই সব আইনি জটিলতা নিয়ে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ইতিমধ্যে কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
আলাপ চারিতায় তাবিথ বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এই নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু আইনি প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রশ্ন এই নির্বাচনকে অনিশ্চিত করতে পারে।’ এ কারণেই সবুজ সংকেত পাওয়ার পরও তাবিথ আউয়ার এখনো কোনো ধরনের প্রচারণায় যাননি।
তাবিথ আউয়াল প্রচারণায় না গেলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মেয়র নির্বাচনের সব প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করেছেন। ঢাকা উত্তর তাঁর নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে।
এখনো আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন না পেলেও তিনি বলেছেন, ‘নেত্রী আমাকে কাজ শুরু করে দিতে বলেছেন, তাই আমি কাজ করছি।’
আইনি জটিলতার এই নির্বাচন আটকে যেতে পারে এমন আশঙ্কার প্রতি ইঙ্গিত করা হলে এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘আইনি জটিলতা তো চিরদিন থাকবে না। একদিন না একদিন আইনি জটিলতা কেটে যাবে। আমি এখন থেকেই মানুষের কাছে যাচ্ছি কথা বলছি। এতে তো আমার ক্ষতি নেই।’
তবে, আওয়ামী লীগ উত্তরের একটি বড় অংশ এখনো আতিকুল ইসলামের আবির্ভাবকে মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা মনে করেন, শেষ পর্যন্ত আতিককে হয়তো প্রার্থী করা হবে না।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, ‘এখন আতিককে মাঠে নামিয়ে মাঠ গরম করা হচ্ছে। কর্মীদের চাঙ্গা করা হচ্ছে। এতে সংগঠন লাভবান হচ্ছে। এটা নির্বাচনের আগে ওয়ার্ম আপ।’
তবে অন্য একজন বলেছেন, ‘এই মনোনয়ন যদি শেষপর্যন্ত দেওয়া হয়, তাহলে কর্মীরা হতাশ হবে। তারা বিশ্বাস করতে শুরু করবে, রাজনীতিতে টাকাই শেষ কথা।’