রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
বলেছেন, সাবমেরিনের তলা ফুটা, এগুলো পানিতে ডুবে গেছে- এই ধরণের বক্তব্য সুস্থ মানুষ দিতে পারে না। পদ্মাসেতু হলে পরে খালেদা জিয়া তাকে ওঠেন কি না, সেটাও দেখবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক বৈঠকে এসব কথা বলেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়া কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইদানীং আবার বলেছেন আমাদের নৌবাহিনীর জন্য আনা সাবমেরিন ফুটো হয়ে গেছে। এটা পানির নিচে ডুবে গেছে। সেনাবাহিনীর বউ এটাও বুঝেন না, সাবমেরিন ডুবে যায় না- এটা পানির নিচ দিয়ে যায়। জানি না এই কথা শুনার পর আমাদের নৌবাহিনীর সদস্যরা বলবেন। আর দেশের জনগণই বা কী বলবে? বুঝতেছি না, তার মাথা ঠিক আছে কি না, তার মানসিক সমস্যা দেখা দিল কি না- তা পরীক্ষা করে দেখা দরকার। ডাক্তার দেখানো উচিত কি না।
পদ্মাসেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে অভিযোগ করে তাতে তা উঠতে খালেদা জিয়ার আহ্বান নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, খালেদা জিয়া মানা করে দিয়েছে, কেউ যেন ওই সেতুতে না উঠেন। দেখি পদ্মা সেতু হোক খালেদা জিয়া নিজেই উঠেন কি না।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার বিচার চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সমালোচনারও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি নেতাদের দাবি, শেখ হাসিনা নিজের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করেও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হিংসার কারণে মামলা চালাচ্ছেন।
এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাই প্রত্যাহার হয়নি। তদন্ত শেষে সব খারিজ হয়েছে।
খালেদা জিয়া অনবরত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মহিলা কত মিথ্যা কথা বলে। তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব কিছু মিথ্যাতে ভরা। মাথার চুল থেকে পা পর্যন্ত সব কিছু নকল।
শেখ হাসিনা বলেন, (খালেদা জিয়া) সব অন্তর্জ্বালা আমাকে দিয়ে মেটাতে চায়। করবেই তো। তা অবশ্য ঠিক, কারণ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, পারেনি।
বর্তমান সরকার টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে উন্নয়ন হচ্ছে জানিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
উকিল নোটিস আমাকে কেন
সৌদি আরবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলায় খালেদা জিয়া কেন আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিদেশি গণমাধ্যমের খবর তুলে ধরেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সে খবর যেখান থেকে এসেছে সেখানে উকিল নোটিস পাঠাক, আমাকে কেন?
গত ৭ ডিসেম্বর গণভবনেই এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সৌদি আরবে বিপুল সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বিদেশি টেলিভিশনের সংবাদ হিসেবে প্রচার হওয়া ভিডিওর কথা তুলে ধরে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে হেয় করতে এই অভিযোগ করেছেন। আর বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে গত ১৯ ডিসেম্বর আইনি নোটিস পাঠান খালেদা জিয়া। এক মাসের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে ক্ষতিপূরণ আদায়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয় ওই নোটিসে।
এই নোটিস নিয়ে এই প্রথম কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তার (খালেদা জিয়া) গোটা পরিবারের সম্পদের হিসাব বের করে আন্তর্জাতিক মিডিয়া। আর এটা বললাম কেন এজন্য আমাকে নোটিস দেয়। এ রকম নোটিস বহু দেখেছি, সময়মত জবাব দেবো। যদি সৎ সাহস থাকে আর সত্যি কোন অপরাধ না করে থাকেন তাহলে যেসব মিডিয়া খবর দিয়েছে তাদের নোটিস দিন। তাদের প্রতিবাদ জানান। তাহলে বুঝব সততার একটা শক্তি আছে। কিন্তু সেটাও পারেননি।