রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ!
৫০ টনের ক্রেন তুলছিল ৭০ টনের গার্ডার

৫০ টনের ক্রেন তুলছিল ৭০ টনের গার্ডার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরায় বক্স গার্ডার দুর্ঘটনার পেছনে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অবেহলার আরেক নমুনার কথা জানিয়েছে ক্রেন পরিচালনাকারীকে গ্রেপ্তার করা র‌্যাব।

বাহিনীটি জানিয়েছে, যে গার্ডারটি গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, সেটির ওজন ৭০ জন। কিন্তু যে ক্রেন দিয়ে সেটি তোলা হচ্ছিল, সেটি বড়জোর ৫০ টন তোলার ক্ষমতা রাখে।

এই ক্রেনটির কাগজে-কলমে উত্তোলন ক্ষমতা ৮০ টন হলেও পুরোনো হওয়ার কারণে শক্তি ক্ষয়ে সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

গত সোমবার বিকেলে উত্তরার জসীমউদ্দীন মোড়ে রাখা গার্ডারটি একটি গাড়িতে তোলার সময় সেটি পিছলে পাশ দিয়ে চলা একটি প্রাইভেট কারকে পিষ্ট করে। এতে এর পাঁচ আরোহী মারা যান। বেঁচে ফেরেন কেবল দুই জন, যাদের বিয়ে হয়েছে দুর্ঘটনার কেবল দুই দিন আগে।

এ দুর্ঘটনার পর পর জানা যায়, নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি না করেই এই গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল। সেদিনই প্রশ্ন উঠে, ক্রেনটির এই সক্ষমতা ছিল কি না, আর আসলে সেই ক্রেনটি কে পরিচালনা করছিলেন।

তবে ক্রেনের চালক এবং ঠিকাদারি কোম্পানির কর্মীরা সবাই পালিয়ে যাওয়ায় সেদিন এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি।

দুর্ঘটনার দুই দিন পর ক্রেনচালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। আর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কী পাওয়া গেছে, সেটি বাহিনীটি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার।

দুপুরে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ হারানো ক্রেনটির সর্বোচ্চ ৪৫-৫০ টন ওজনের গার্ডার সরানোর সক্ষমতা ছিল। কিন্তু সোমবার ১৫ আগস্ট দুর্ঘটনার দিন এই সক্ষমতার ক্রেনটি দিয়ে ৬০-৭০ টন ওজনের গার্ডার সরানো হচ্ছিল। এত ভারী গার্ডার ওঠানোর সময় ক্রেনে কাউন্টার ওয়েইট রাখার দরকার ছিল। তা-ও রাখেনি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। ফলে ক্রেনের বাড়তি ওজন বহন করা সম্ভব হয়নি।’

এ দুর্ঘটনায় ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এ ছাড়া ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী। চালক নিজেরও এ ধরনের কোনো ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না।

এ দুর্ঘটনার পর যে প্রাথমিক তদন্ত করেছে সরকার, তাতে ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার প্রমাণ উঠে এসেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলামকেও তদন্তের আওতায় আনতে বলেছেন।

এই নির্মাণ কাজ নিয়ে সফিকুলের যে অবহেলা রয়েছে, সেটি দুর্ঘটনার দিন তার বক্তব্য ও র‌্যাবের বক্তব্যের পার্থক্যে উঠে এসেছে। সফিকুল ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেছিলেন, যে ক্রেন দিয়ে বক্স গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল সেটির সক্ষমতা ছিল।

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, বিআরটি প্রকল্পের থার্ড পার্টি হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড থেকে মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি আনা হয়। ক্রেনটি ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে চলছে। প্রথমে ক্রেনটির সক্ষমতা ৮০ টন ছিল। পরে আস্তে আস্তে ক্রেনটির সক্ষমতা কমে যায়। সর্বশেষ ক্রেনটি দিয়ে ৪৫-৫০ টন ভর শিফট করা সহজ ছিল। কিন্তু এই ক্রেন দিয়ে ৬০-৭০ টন ওজনের গার্ডারটি শিফট করা হচ্ছিল।

তিনি জানান, ২০২১ সালে সর্বশেষ ফিটনেস যাচাই করা হয়, এর পর ক্রেনটির আর কোনো ফিটনেস যাচাই করা হয়নি।

খন্দকার মঈন বলেন, আমরা গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, অতিরিক্ত ভার বহন করায় ক্রেনটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়। এ ধরনের গার্ডার শিফট করতে কাউন্টার লোড ব্যবহার করা উচিত ছিল। আরেকটি ক্রেন পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই রাখা উচিত ছিল। নিরাপত্তার ব্যবস্থার অনেক ঘাটতি ছিল।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com