রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
প্রতীকের তালিকায় শাপলা না থাকায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না: ইসি গার্ডিয়ান লাইফ শতভাগ ক্যাশলেস; লেনদেন হবে ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রাহক আস্থা ও সুশাসনে উদাহরণ জেনিথ ইসলামী লাইফ পুড়েছে আমদানির, নিরাপদ রয়েছে রপ্তানির অংশ: বিমান উপদেষ্টা সিংড়ায় অধ্যক্ষ আনুকে বিজয়ী করতে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা কেরাণীগঞ্জে সাড়ে তিন কোটি টাকা উদ্ধারের দাবীতে মিশরিয়ানের আর্তনাদ হোমল্যান্ড ধ্বংসের মাস্টারমাইন্ড জেল খাটা ভয়ংকর শাহাদাত! সারাদেশে মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা জুলাই যোদ্ধাদের আগুনের ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে বিধ্বস্ত ভবনটি, বেকারের শঙ্কায় শত শত শ্রমিক কুমিল্লার নারীদের হাতে বানানো মোবাইল যাচ্ছে বিদেশে

মা-ছেলে যখন সহপাঠী, হোমওয়ার্ক-স্কুল সবই একসঙ্গে!

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০২২
  • ৯৫৬

অনলাইন ডেস্ক: পার্বতী সুনার, তিনি আবার পড়াশোনা শুরু করার জন্য ভারতে গৃহপরিচারিকার চাকরি ছেড়েছিলেন। দ্বাদশ শ্রেণি শেষ করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছিলেন। নেপালি মা পার্বতী সুনার, ১৫ বছর বয়সে সাত বছরের বড় এক ব্যক্তির সাথে পালিয়ে যান তিনি। পরে আবার পড়াশোনা শুরু করার জন্য তিনি নিজের ছেলের স্কুলেই ভর্তি হয়েছেন।

পার্বতী বলেন, ‘আমি নতুন কিছু শিখতে খুব উপভোগ করি। আমার নিজের সন্তানের সঙ্গে সহপাঠীদের সাথে যোগ দিতে পেরে আমি গর্বিত। ’ হিমালয় জাতির দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে পুনর্বাস গ্রামে বাস করেন পার্বতী, সেখানে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন তিনি।

দুই কোটি ৯০ লাখ জনসংখ্যার দেশ নেপালে মাত্র ৬০ শতাংশ মহিলা শিক্ষিত। এমন পরিস্থিতিতে ২৭ বছর বয়সী পার্বতী বলেন, তিনি পরিবারের হিসাব রাখতে সক্ষম হওয়ার জন্য ‘যথেষ্ট শিক্ষিত’ হওয়ার আশা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার স্কুল ছেড়ে যাওয়া উচিত হয়নি। ’ তিনি আরো বলেন, যে পড়াগুলো মিস করেছিলেন তা আবার শুরু করার ইচ্ছা আছে তার।

১৬ বছর বয়সে তার প্রথম সন্তান হয়েছিল। তার ছেলে রেশমের বয়স এখন ১১ বছর। রেশম বলে, ‘আমি মায়ের সাথে স্কুলে যেতে ভালোবাসি।’ তার মায়ের সঙ্গে সেও পড়াশোনা করে। তার সাথে দুপুরের খাবারের বিরতি কাটায়। এরপর কাছাকাছি একটি ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার ক্লাসে যাওয়ার সময় মায়ের সাইকেলের পিলিয়ন হয়।

‘আমরা স্কুলে যাওয়ার সময় গল্প করি এবং আমরা আমাদের গল্প থেকে শিখি’, রেশম জানায়, তার মায়ের আশা যে সে একজন ডাক্তার হবে।

গ্রামীণ স্কুলের অধ্যক্ষ জীবন জ্যোতি ভারত বাসনেট বলেন, একজন ছাত্রী হিসেবে পার্বতী গড়পড়তা মানের, কিন্তু তিনি একজন প্রখর শিক্ষার্থী।

পার্বতীর দিন শুরু হয় টিনের ছাদের দুই কক্ষের খালি ইটের কাঠামোতে ছেলে রেশম, অর্জুন এবং তার শাশুড়ির সাথে ভাগ করে নিয়ে। তাদের বাড়িতে একটি টয়লেটের অভাব রয়েছে, তাই পুরো পরিবার পাশের একটি সরকারি জমি ব্যবহার করে।

তাদের দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যে রয়েছে বাড়ির বাইরে একটি হ্যান্ডপাম্প থেকে টানা জলে স্নান করা, তার চারপাশের সবুজ মাঠে কাজ করা এবং জন্মদিনের জন্য কেক তৈরি করা। পার্বতীর স্বামী দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই শহরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তার উপার্জনেই চলে পার্বতীর সংসার।

মসুর ডাল দিয়ে ভাত খেয়ে পার্বতী তার ছেলের সাথে স্কুলে যান। হাঁটা পথে প্রায় ২০ মিনিট লাগে স্কুলে পৌঁছতে। রওনা হওয়ার আগে হালকা নীল ব্লাউজের স্কুল ইউনিফর্ম এবং একটি ডোরাকাটা টাইসহ স্কার্ট পরেন পার্বতী। তাদের স্কুলটি একটি টিনের ছাদের কাঠামোর। এর চারপাশ গাছ দিয়ে ঘেরা।

পার্বতীর এক সহপাঠী ১৪ বছর বয়সী বিজয় বিকে বলে, পার্বতীর সাথে একই ক্লাসে থাকাটা অনেক মজার। নেপালি শব্দে বড় বোন সম্বোধন করে বিকে বলে, ‘দিদি অনেক মজার। আমি দিদিকে পড়াশোনায় সাহায্য করি এবং দিদিও আমাকে সাহায্য করে। ’

পার্বতীর প্রচেষ্টা নেপালে গ্রামীণ নারীদের তাদের ঘরোয়া গণ্ডির বাইরে বেরোতে শেখাবে ও অনুপ্রাণিত করবে। দেশটিতে তারা এখনো বৈষম্যের সম্মুখীন হন এবং বাল্যবিবাহ ব্যাপক হারে বিস্তৃত, যদিও বাল্যবিবাহ দেশটিতে অবৈধ।

সূত্র : আলজাজিরা।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com