সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: নারীদের চলাচল নিরাপদ করার লক্ষ্যে ঢাকার ১০০টি বাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে মিরপুরের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনভেনশন সেন্টারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
দিপ্ত ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় গণপরিবহনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় চলাচল করা পরিস্থান পরিবহন, রাজধানী সুপার সার্ভিস, প্রজাপতি পরিবহন, বসুমতি পরিবহন ও গাবতলী এক্সপ্রেসের ১০০টি বাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারীরা গণপরিবহনে চলাচলের ক্ষেত্রে অনিরাপদ বোধ করেন। তারা গণপরিবহনে যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। সেজন্য গণপরিবহনে নারীদের যাত্রা আরও নিরাপদ করতে ও স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ফলে ৯৯৯ ও ১০৯ এ কল করে হয়রানির শিকার নারীরা অভিযোগ জানালে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, নারীদের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নে অংশীদার করতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে সর্বপ্রথম নারীদের জন্য দুটি বাস চালু করেন। একটি বাস ইডেন কলেজ থেকে মতিঝিল এবং অপরটি ইডেন কলেজ থেকে গাবতলী যেতো। এখন নারীদের জন্য কাজ করছেন তার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সময় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পুরুষের সমান অংশীদার হবে নারীরা। সে জন্য গণপরিবহন নারীদের নিরপদ করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সবাই সচেতন হবে, অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আানা সম্ভব হবে।
নারীরা বাসের সহকারীদের পাশাপাশি পুরুষ যাত্রীদের দ্বারাও হয়রানির শিকার হয় মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেবল বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায়ও একই চিত্র দেখা যায়। এসব দেশে নারীরা হয়রানির সঙ্গে সহিংসতারও শিকার হচ্ছে।
বাস চালক-সহকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নারী যাত্রীরা আপনাদের মা-বোন-স্ত্রী-বন্ধু। তাদের নির্যাতন বা হয়রানি করবেন না। এ ব্যাপারে বাস মালিকদেরও সচেতন থাকতে হবে।
দিপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান বলেন, গণপরিবহন নারীদের জন্য নিরাপদ ও উন্নত করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রজেক্টটি ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি নেওয়া হয়। ৩ বছরের এই প্রজেক্টে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
আঁচল ফাউন্ডেশন বলছে, রাজধানীর গণপরিবহনে প্রায় ৬৪ শতাংশ নারী নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এর মধ্যে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার, ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ বুলিং, ১৫ দশমিক ২ শতাংশ সামাজিক বৈষম্য, ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ লিঙ্গ বৈষম্য এবং ৮ দশমিক ২ শতাংশ বডি শেমিংয়ের শিকার হন।