রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় হতাহতের ৯ মাস না পেরোতেই আবারও বিস্ফোরণে কাঁপল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। এবার ঘটনাস্থল বিএম ডিপোর আধাকিলোমিটার দূরের সীমা অক্সিজেন লিমিটেড কারখানা। গতকাল শনিবার এই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ছয়জন। আহত ২০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। বাড়িঘর ও অফিসের দরজা-জানালা ভেঙে গেছে, দেয়ালে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চলছে। কারণ অনুসন্ধানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর গ্রামে অবস্থিত বিএম কনটেইনার ডিপোর আধাকিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সীমা অক্সিজেন কারখানায় সিলিন্ডার ফেটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার দূরের ঘর-বাড়ি-অফিসের দরজা-জানালা ও কাচ ভেঙে ছিটকে পড়েছে। ফাটল ধরেছে অসংখ্য স্থাপনার দেয়ালে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি ভারী লোহার টুকরা গিয়ে এক কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকায় এক ব্যক্তির মাথায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। দুর্ঘটনায় কারখানার ভেতরে থাকা সিলিন্ডার ভর্তি চারটি ট্রাক দুমড়েমুচড়ে গেছে। উড়ে গেছে কারখানার দুটি শেড। ভেঙে পড়েছে অফিস ভবনগুলোর বিভিন্ন অংশ। খবর পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণ করলে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় গাউছিয়া কমিটি ও পুলিশ মিলে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ঘটনাস্থলে ছুটে যান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম, সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ ও সোনাইছড়ি ইউপির চেয়ারম্যান মনির হোসেন।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায় সিলিন্ডারভর্তি ট্রাক ও আশপাশে। উড়ে গেছে কারখানার একাধিক শেড, ভেঙে পড়েছে বিল্ডিং। এসবের মধ্যে উদ্ধারকাজ করা কঠিন। তবু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ২০ থেকে ২২ জনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছয়জন ছিল মৃত। এখনো ভবনের ভেতরে বিভিন্ন কক্ষে হতাহত আছে বলে আমরা মনে করছি। এ জন্য উদ্ধারকারী আলাদা দুটি টিম এসে কাজে যোগ দিয়েছে। আবারও বিস্ফোরণের শঙ্কা আছে।’