সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন
স্বজন মজুমদার : দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে অধস্তন আদালতের বিচারক ও আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরিধান করার আবশ্যকতা নেই বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আজ শনিবার (১৩ মে) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নির্দেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধস্তন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত, ট্রাইব্যুনালগুলোর বিচারক এবং আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে পরিধেয় পোশাক সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— ‘দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনাক্রমে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, অধস্তন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত, ট্রাইব্যুনালগুলোর বিচারকএবং আইনজীবীরা মামলা শুনানিকালে পরিধেয় পোশাক সংক্রান্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিগত ২৮/১০/২০২১ তারিখের বিজ্ঞপ্তি নম্বর ৪০/২০২১, জে, এর কার্যকারিতা স্থগিত করে বিগত ৩০/০৩/২০২১ তারিখের বিজ্ঞপ্তি নম্বর ৭, জে, পুনর্বহাল করা হলো।’
‘এমতাবস্থায়, দেশের সব অধস্তন দেওয়ান ও ফৌজদারি আদালত, ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং আইনজীবী ক্ষেত্রমতো সাদা ফুল শার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যাড / কালো টাই পরিধান করবেন। এক্ষেত্রে কালো কোট এবং গাউন পরিধান করার আবশ্যকতা নেই।’
এ নির্দেশনা আগামী ১৪ মে থেকে পরবর্তী নির্দেশ প্রদান না করা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল উচ্চ তাপমাত্রার প্রেক্ষাপটে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়। ই-মেইলযোগে সুপ্রিম কোর্টের দুই জন আইনজীবী ও একটি সংস্থার পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়েছিল। ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির, ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে ব্যারিস্টার মো. কাউছার ও আইন বায়েজীদ হোসাইন এ আবেদন করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১১ মে) ঢাকা আইনজীবী সমিতির একজন সদস্য আইনজীবী শফিউল আলম (সদস্য নম্বর- ২৫৬৯৪) মাত্র ৪৪ বছর বয়সে ২ জন নাবালক সন্তান রেখে হিট স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেছেন।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসহনীয় গরমে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সুবিবেচনায় বছরের মার্চ হতে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সময়কালীন আইনজীবীদের কালো কোট পড়া ‘ঐচ্ছিক’ নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে একটি আবেদন জানানো হয়েছে। সারাদেশের ২০ জন আইনজীবী এ আবেদন জানিয়েছেন।
আবেদনকারীরা হলেন— সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান, মো. মহসিন কবির, তানজিলা রহমান জুঁই, সুবীর নন্দী দাস, জেসমিন আখতার, ফারজানা ইসলাম, নিশাত ফারজানা, চট্টগ্রামের জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য তানিয়া বেগম, মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সারমিন আক্তার, শরিয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পূজা বিশ্বাস, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ভূঁইয়া, মো. আইনুল ইসলাম, মাহমুদা আহমেদ নিলা, সামিনা রহমান, আসমা উল হুসনা, নাশিদুস জামান, কেএম আশরাফ রাব্বী, তানজিলা আহমেদ লিসা এবং ইফাত হাসান (শাম্মী)।
পরে সারাদেশে তাপ প্রবাহের কারণে আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী-বিচারকদের কালো কোট ও গাউনে পরিবর্তন আনার বিষয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের নিয়ে সভা ডাকেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, যার ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৩ মে) বেলা ১১টায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।