শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন
দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়কে লাভজনক করবেন। আরেকজন সবকিছু ঠিক করে দেবেন এমন অঙ্গীকার দিয়ে বেড়াচ্ছেন।
আরেকজন এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিমন্ত্রী হয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বিতর্কিত হয়ে এখন বলছেন, আগেও দুর্নীতির সঙ্গে আপোস করেননি। এখনো করবেন না। তঁদের এমন অতিকথনে অন্যান্য সিনিয়র মন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যারপরনাই বিব্রত।
দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল বললেন, রক্ত দিয়ে হলেও বিমানকে লাভজনক করব। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে বিমানের অনেক বদনাম শুনেছি। বিমানকে লাভজনক করা খুব কঠিন কাজ না। বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও, আমার রক্ত দিয়ে হলেও বিমানকে লাভজনক করব।’
অবশ্য এমন অঙ্গীকারের পর নিজের ফিরিস্তি দিতেও বাদ রাখেননি কে এম শাহজাহান কামাল। তিনি বলেন, ‘আমি বেশি দিন সময় পাব না। এর মধ্যে তাকে মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে, সংসদে যেতে হবে, আবার এলাকায়ও যেতে হবে। কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পেলে কাজ করতে পারব।’
আবার সংবাদ সম্মেলন করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমি বিটিআরসির ওপর ক্ষুব্ধ। কেন তারা এখনো ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারেনি। কমায়নি।’মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ক্যান্সারে আক্রান্ত। অন্ধ গলিতে আছে তথ্যপ্রযু্ক্তি বিভাগ।’
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘আমার কর্মপরিকল্পনার মধ্যে আরেকটা উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো সরকারের মন্ত্রণালয় ও সেবাখাতকে ডিজিটালাইজড করা। যদিও এটা কঠিন কাজ। কারণ, সরকারের ভেতরে থাকা কিছু মানুষ এটা করতে দিতে চাইবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চান। তাই আমি এটা করব। আমি আগামী এক বছর সংগ্রাম করে যাব।’
আর দায়িত্ব পরিবর্তনের পর ফেসবুকে মন্তব্য করেন তারানা হালিম, ‘আমাকে সরিয়ে দেওয়াটা মানুষ হিসেবে একটু লাগে। আমি তো ফেরেশতা নই, অন্য কিছুও নই; মানুষ। রক্তে-মাংসে গড়া।’
পরে আবার তথ্যমন্ত্রণালয়েরই প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগ দিয়ে তারানা হালিম সংবাদ সম্মেলন করেন, আমি এখানেও দুর্নীতির সাথে আপোস করব না। আগেও দুর্নীতির সঙ্গে কখনোই আপোস করিনি। আপোস করা সম্ভবও নয়।
মন্ত্রীদের উল্লেখিত মন্তব্য ও বক্তব্যে সিনিয়র মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তারা অনেকেই বিব্রত। তাঁরা একে অন্যান্য মন্ত্রী এবং সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করার বক্তব্য হিসেবেই দেখছেন। একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এই পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছেন, তাঁদের বক্তব্য অনেকক্ষেত্রেই অপ্রাসঙ্গিক ও অতিকথন।
এমন অতিকথনে তাঁরা নিজেরা যেমন হাস্যস্পদ হচ্ছেন, তেমনি সরকারকে বিব্রত করছেন। একাধিক সিনিয়র মন্ত্রী নব্য মন্ত্রিত্ব প্রাপ্তদের কথাবার্তায় আরও সংযমী হয়ে কাজেই নিজের পরিচয় দিতে বলেন। তাঁদের মতে, জনগণ এখন অনেক সচেতন, কথায় আর চিঁড়ে ভেজেনা, কাজ দিয়েই নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে।