রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

মানবদেহে নতুন অঙ্গের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা!

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮
  • ৬৮০

নি্উজ ডেস্ক : দেহ সংসারে সেই হয়তো সবার বড়। যদিও নাকের ডগায় থাকলেও, জানা ছিল না এতদিন।

 মানুষের শরীরে ‘ইন্টারস্টিশিয়াম’ নামে একটি অঙ্গ রয়েছে এবং অন্যতম বৃহৎ এই অঙ্গটি সম্পর্কে ঠিকমতো জানা গেলে হয়তো ক্যানসার-রহস্যও সমাধান হবে। সায়েন্টিফিক রিপোর্ট-এ সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এই দাবি করেছেন একদল মার্কিন বিজ্ঞানী।

তারা বলছেন, সদ্য খোঁজ পাওয়া এই ইন্টারস্টিশিয়াম হল ফ্লুইড বা দেহরস ও কলাকোষের সমষ্টি, যা সারা শরীরে জাল ছড়িয়ে রয়েছে। হৃৎপিণ্ড বা যকৃতের যেমন আলাদা আলাদা কাজ, এদেরও নির্দিষ্ট দায়দায়িত্ব রয়েছে।

মানবদেহের দুই-তৃতীয়াংশই পানি। বেশিটাই কোষবন্দি অবস্থায়। বাকি তরলের ২০ শতাংশ ইন্টারস্টিশিয়াল। ইন্টার শব্দের অর্থ মধ্যবর্তী। আর স্টিশিয়াল বলতে অবস্থান। অর্থাৎ দুটি অংশের মাঝখানে থাকা তরল। এই মধ্যবর্তী তরল ও কলাকোষকে একসঙ্গে বলে ইন্টারস্টিশিয়াম। গোটা দেহে ছড়িয়ে রয়েছে সেটি। পাকস্থলী থেকে শ্বাসযন্ত্র, এমনকি ত্বকের ঠিক নিচে থাকে এটি।

তবে ইন্টারস্টিশিয়াম যে সম্পূর্ণ আলাদা একটি অঙ্গ, তার প্রমাণ পেতে আরও গবেষণা প্রয়োজন, জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরাই।

কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  গবেষক দলের প্রধান নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাঙ্গন মেডিক্যাল সেন্টারের প্যাথোলজির অধ্যাপক নিল ডি থিস বলেন, ‘একে বুঝতে হলে মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ ও তাদের কাজকর্ম নতুন করে খতিয়ে দেখতে হবে!’ আর সেই কাজটা সফলভাবে করা গেলে, শরীরে একটি অংশ থেকে অন্যত্র ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে কীভাবে, সেটাও হয়তো স্পষ্ট হয়ে যাবে, দাবি বিজ্ঞানীদের।

বিশেষ করে, ইন্টারস্টিশিয়াল ফ্লুইড বা মধ্যবর্তী তরলই যখন লিম্ফ বা লসিকা-র মূল উৎস। লসিকা থেকে শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি হয়। যা কি না যেকোনো রোগ সংক্রমণ ঠেকাতে মূল হাতিয়ার।

কেমন দেখতে এই নতুন অঙ্গটি? থিসের কথা, ‘এর কোনও ছবি দিতে পারব না। শুধু বলতে পারি এটি রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশের ওই ইন্টারস্টিশিয়াল বা মধ্যবর্তী স্থান কেউ কখনও দেখেনি। কারণ বিজ্ঞানীরা যে পদ্ধতিতে কলা-কোষের পরীক্ষা করে থাকেন, তাতে অংশটি ধরা পড়া অসম্ভব।’

কোষগুলো জলভর্তি থলির মধ্যে থাকে। সবটা মিলিয়ে ইন্টারস্টিশিয়াম। কোষ পরীক্ষা করে দেখার সময় যখন শরীর থেকে বের করা হয়, তখন তরল অংশ বেরিয়ে যায়। মাইক্রোস্কোপের তলায় ওই কোষগুলোই শুধু ধরা পড়ে।

তা হলে বিষয়টা জানা গেল কীভাবে? ২০১৫ সালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে এন্ডোস্কোপি (মুখ দিয়ে ক্যামেরা লাগানো বিশেষ পাইপ ঢুকিয়ে শরীরের ভিতরের ছবি তোলা) করার সময় ইসরাইলের দুই চিকিৎসক এক রোগীর পিত্তথলির মধ্যে অদ্ভুত ধরনের কিছু দেখতে পান। ওই দুই চিকিৎসক দাবি করেন, সেটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের চেনাজানা কোনো দেহাংশের সঙ্গে মেলাতে পারেননি তারা। রহস্যময় ওই অংশের ছবি তুলে সেটি ও ক্যানসার রোগীটির বায়োপসি স্লাইড তারা নিউইয়র্কে থিসের কাছে পাঠিয়েছিলেন। পরবর্তী দীর্ঘ গবেষণায় নতু অঙ্গের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। ‘তবে আরও কত রহস্যই যে জাল ছড়িয়ে রয়েছে,’ বিস্ময় কাটছে না থিসের।

আরপি

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com