রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
নিউজ ডেস্কঃ গতকাল বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদী ইউনিয়নে নিজ সন্তান অপহরন করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক আটক হয়েছেন দুই সন্তানের পিতা। প্রতক্ষদর্শীরা জনান, ঐ দুই সন্তানের পিতা কাউকে না জানিয়ে তার সন্তানদের প্রাইভেট গাড়িতে করে চলে যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের চিৎকার শুনে প্রাইভেট কারটি ধাওয়া করে। প্রাইভেট গাড়িটি চরামদ্দি ব্রীজ এর কাছে পৌঁছালে স্থানীয়রা গাড়িটি আটক করে। এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে ছেলে ধরার আতংক ছড়িয়ে পরে। গাড়িতে থাকা ড্রাইভারসহ দুই জন এবং সাফয়ান এবং আরিয়ান নামে দুটি শিশু উদ্ধার করে চরামদ্দি পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। উত্তেজিত জনতা প্রাইভেট গাড়ি ভাংচুর এবং গাড়িতে থাকা তিন আরহীকে মারধর করে। ঐ শিশুদের মা তানিয়া এবং পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে চরামদ্দি পুলিশ ক্যাম্পে আসেন। এসময় তিনি জানান, সে চরাদী ইউনিয়নের সন্তোষদি গ্রামের হানিফ হাওলাদারের মেয়ে ।বিগত সাত বছর পূর্বে তাদের প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে তাদের বিবাহ হয়। ঢাকা গ্রামেন্টেসে চাকরি করা অবস্থায় যশোর ঝুমঝুমপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবুল আলীর ছেলে সবুজ হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঐ সময় তার স্বামী সবুজ ঢাকা একটি প্রিন্টের একটি কারখানায় চাকরি করত। পিতা মাতাকে না জানিয়ে তিনি সবুজকে বিয়ে করে যশোর চলে যান। বিয়ের চার বছরের মাথায় ফুটফুটে দুটি ছেলে সন্তানের হয় তাদের। বিয়ের পর থেকে তার স্বামী নেশা করে তাকে মারধর করত এবং যৌতুকের জন্য চাপ দিত। কিন্তু পিতা- মাতার মতামত না নিয়ে বিয়ে করায় সব নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করত সে। গত এক মাস পূর্বে তার স্বামী তাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিলে গ্রামের বাড়ি বাবার কাছে চলে আসে। আন্যদিকে ঐ দুই সন্তানের পিতা সবুজ হোসেনের জানান, বিভিন্ন সময় তার পিতা- মাতার সাথে খারাপ আচরন করায় সংসারে পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো । এক সময় তার স্ত্রী তাকে যশোর ছেড়ে শ্বশুর বাড়ি থাকার জন্য চাপ দিলে, এ নিয়ে প্রতিনিয়ত তার সাথে ঝগড়াঝাটি হতো। একমাস পূর্বে কাউকে না জানিয়ে তার স্ত্রী যশোর ছেড়ে বরিশালে তার বাবার বাড়ি চলে আসে । অনেক অনুরোধ করা হলেও সে যশোর যতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে একবার বসা হয়েছে। কিন্তু তার স্ত্রী জানিয়ে দেন সে সংসার করবে না।তাই বাধ্য হয়ে সন্তানদের নিজের কাছে রাখতে এ কাজ করনে। তিনি ভাবছিলেন সন্তানদের নিয়ে গেলে তা স্ত্রী তার কাছে চলে যাবে। কিন্তু এধরনের ঘটনা ঘটবে তিনি বুঝতে পারন নি। তিনি আরো জানান, আজ স্ত্রী সন্তানদের নেওয়ার জন্য বরিশালে চারাদী গামে শ্বশুর বাড়ি আসেন। দীর্ঘ একঘন্টা তার শ্বশুর বাড়িতে বসে তার স্ত্রী কে যশোর নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু কোন ভাবেই তাকে রাজী করতে পারেননি। তাই তিনি সন্তাদের নিয়ে গাড়িতে উঠলে তার স্ত্রী ছেলে ধরা বলে চিৎকার করে স্থানীয়দের ক্ষেপিয়ে তোলেন। ফলে স্হানীয়রা তাদের ধাওয়া করে গাড়ি ভাংচুর করে এবং তাদের মারধর করে। পরে স্হানীয়রা পুলিশ নিয়ে তাদের ক্যাম্প নিয়ে আসে। অবশেষে চরামদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন খোকন এবং পুলিশ ক্যাম্পের এস আই শামীম মুছ লেখা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন এবং আদালত অথবা পারিবারিক ভাবে বসার মাধ্যমে এ ঘটনা মিমাংসা করার জন্য সবুজ এবং তানিয়ার পরবারের সদস্যদের অনুরোধ জানান। তবে এ ঘটনায় কোন পরিবার অভিযোগ না করায় কোন মামলা হয়নি।