বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি—নরসিংদীতে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত জেমসের গানে মাতাল জীবন সঙ্গী নৃত্যশিল্পী নামিয়া আনাম সমুদ্রপথে পাচারের সময় ২৯ জন উদ্ধার, আটক ৩ রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংককে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে: পিআরআই আবাসিক হোটেলে পুলিশের অভিযানে ১১ তরুণ-তরুণী আটক সেনা ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ শিক্ষকদের বিষয়ে বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা দেশজুড়ে বিনিয়োগ: শিক্ষা বিস্তারে জেলা–উপজেলা প্রশাসনকে যুক্ত করছে বিএসইসি এস এম বখতিয়ার আলম ইসলামিক ফাইন্যান্সের নতুন চেয়ারম্যান শাহজালালে আগুনের ঘটনায় রপ্তানিকারকদের ৬ দাবি

চবির যে সংগঠন অন্য সবার চেয়ে আলাদা

ভিশন বাংলা ২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদন: ২ হাজার ৩১০ একরের বিশাল ক্যাম্পাস। এত বড় একটা জায়গাজুড়ে পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিচ্ছন্নতাবিষয়ক কিছু একটা করা চাট্টিখানি কথা নয়। কঠিন কাজটাই করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ’। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, হলের পাশে বৃক্ষরোপণ, দোকান ও ঝুপড়িতে ডাস্টবিন স্থাপন—দুই কাজই করে যাচ্ছে সমানতালে। ক্যাম্পাসে ঢুকতেই চোখে পড়ে জিরো পয়েন্ট। সেখানে ‘মানবতার দেয়াল’ স্থাপন করেছে তারা। জিরো পয়েন্ট থেকে সামনে এগোলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জয় বাংলা ভাস্কর্য। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তথা চট্টগ্রামের প্রথম ত্রিমাত্রিক গতিরোধকটি এখানেই বানিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা।

মোট সদস্য প্রায় ৭০০ জন। তাঁরাই সংগঠনটির চালিকা শক্তি। তাঁদের মাসিক চাঁদার ওপর নির্ভর করে চলে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম। যেমন রক্তদান কর্মসূচি, শীতবস্ত্র ও ঈদবস্ত্র বিতরণ, দুর্যোগকালীন ত্রাণসহায়তা, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সেলিং, বইমেলা, বই বিনিময় উৎসব, বিনা মূল্যে পাঠদান, শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ ইত্যাদি।

২০২১ সালে প্রথমবারের মতো বই বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করে ‘উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ’। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তারা এ আয়োজন করে আসছে। এবার ‘উদ্দীপ্ত বই বিনিময়’ উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৩ হাজার জন। ৮-১০ হাজার বই তাঁরা বিনিময় করেন। কার্যক্রমের শর্ত ছিল, যে–কেউ এক বা একাধিক বই জমা দিয়ে সমানসংখ্যক বই নিতে পারবেন। আর সর্বোচ্চ বই বিনিময়কারী পাবেন জনপ্রিয় লেখকদের লেখা পাঁচটি নতুন বই। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হাসিবুল খান বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা উদ্দীপ্ত বই বিনিময় উৎসব করি। সব বই-ই কমবেশি রাখার চেষ্টা করি। একবার এক শিক্ষার্থী ঘুরতে এসে আমাদের উদ্যোগ দেখে বাসায় গিয়ে ৮০টি বই নিয়ে এসেছিল। এটা একটা স্মরণীয় ঘটনা।’

‘ডেঙ্গুতে আতঙ্ক নয়, বাড়াই সচেতনতা’ নামে এ বছর মশকনিধন অভিযানও চালিয়েছে উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ। প্রায় ২৫ স্বেচ্ছাসেবী এ কার্যক্রমে অংশ নেন। ফগার মেশিন ও জীবাণুনাশক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, অনুষদ ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গিয়েছেন তাঁরা। সপ্তাহব্যাপী চলেছে কার্যক্রম।

রঙের ড্রাম দিয়ে অভিনব এক কাজ করেছেন সংগঠনের সদস্যরা। অব্যবহৃত ড্রাম প্রথমে তাঁরা সংগ্রহ করেছেন। এরপর পরিষ্কার করে ড্রামগুলো রাঙিয়েছেন নিজেদের পছন্দমতো। রঙিন ড্রাম এখন ডাস্টবিন হিসেবে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন অনুষদ, হল ও ঝুপড়ি দোকানের সামনে। দৃষ্টিনন্দন এই উদ্যোগ সম্পর্কে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল খান বলেন, ‘নগরীর ষোলশহর এলাকা থেকে রঙের অব্যবহৃত ড্রামগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়লা যথাযথ স্থানে ফেলার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে আমরা ডাস্টবিনে প্রকৃতি, পরিবেশ ও সচেতনতামূলক নানা ধরনের চিত্র এঁকেছি। প্রথম ধাপে প্রায় ৪০টি ডাস্টবিন বসানো হয়েছে।’

ফল উৎসব উদ্দীপ্ত বাংলাদেশের আরেকটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। এ উৎসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিজেদের জন্য নয়, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য। মৌসুমি ফল হিসেবে এবার ছিল ৩০ কেজি আম, ২ ছড়ি কলা, ৫০০টি লিচু, ১৫টি পেঁপে, ৩০টি আনারস, ৫ কেজি করে আপেল, মাল্টা, পেয়ারা ও লটকন, ২ কেজি করমচা, ৭ কেজি জাম ও ১০টি কাঁঠাল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনে আয়োজিত হয়েছিল এই ফল উৎসব।

আলোকিত মানুষ গড়া, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা উদ্দীপ্ত বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য। ২০৩০ সালের মধ্যে নিজেদের উদ্যোগকে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে দিতে চায় তারা।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2011-2025 VisionBangla24.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com