বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন
সম্প্রতি দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে সম্পৃক্ত হয়েছে এক ঝাঁক তরুন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। দেশ সেবার মহান ব্রত বুকে ধারন করে তাদের এ নবযাত্রা। দীর্ঘ চৌদ্দ বছরের অপেক্ষার অবসানে এ অন্তর্ভুক্তির মাঝে আছে উচ্ছ্বাস ও প্রাপ্তি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশের ধারাবাহিকতায় নতুন প্রজন্মের নিয়োগ সংক্রান্ত পথচলায় অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা আর ধৈর্যের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। স্বাস্থ্য বিভাগের নিরলস প্রচেষ্টায় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের এ সংযুক্তি তাদের ভাগ্যাকাশে এবং বাংলার আপামর জনগণের রোগনির্নয় ও চিকিৎসা সেবামান্নোয়নে এ যেন এক নব সূর্যোদয়।
নানাবিধ জটিলতা ও সমীকরণে পথ দীর্ঘ হতে হতে প্রায় আশাহীন হয়ে পড়েছিল তাঁরা, মুক্তি যেন সূদুরপরাহত। এ নিমজ্জমান পরিস্থিতিতে আলোকবর্তিকা হয়ে আসে আলো-আশার বাতিঘর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লান্তিহীন প্রচেষ্টা বিশেষত প্রিয় মহাপরিচালক মহোদয় এবং সদ্য বিদায়ী পরিচালক প্রশাসন মহোদয় এবং মিডিয়ায় বিরতিহীন সমর্থন ও কার্যকর পদক্ষেপের ফলে তাদের নিয়োগটি আলোর মুখ দেখে। দেশের রোগ নির্ণয় সেবার মানোন্নয়ন ও নিরাময় সেবাকে গ্রহনযোগ্য, যুগোপযোগী এবং সাধারণ মানুষের নিকট সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে নিয়োগটি মাইলফলকই বলা যায়।
দীর্ঘ অপেক্ষা, প্রচেষ্টা এবং সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা ও সমর্থনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় তাদের এ সংযুক্তি সত্যি আনন্দের। তাঁরা স্বাস্থ্য বিভাগের এ ক্লান্তিহীন চেষ্টার প্রতি সম্মান জানাতে এবং সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্তদের নিজেদের মধ্যে পরিচিতি লাভ এবং আমাদের পেশাগত কিছু চাওয়া পাওয়ার কথা তুলে ধরার লক্ষ্যে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখ শুক্রবার ঢাকায় বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে অর্ধসহস্রাধিকের উপস্থিতিতে “রণভেরী’২৪ ” নামে “স্বাস্থ্য বিভাগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও মিলনোৎসব” আয়োজন করে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সুমন শেখ ও প্রমিত বণিকের সঞ্চালনায় এবং আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক উত্তম কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) বর্তমানে পরিচালক নিপসম অধ্যাপক ডা: মো: শামিউল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (অর্থ) এবং আনোয়ার খান মডার্ন ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব হেলথ সায়েন্সের ডীন অধ্যাপক ডা: রুহুল ফুরকান সিদ্দিক পিএইচ.ডি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সহকারী সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর সাবেক ডেপুটি চীফ মোঃ বজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আয়োজকদের বক্তব্যে, সরকারি চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের “দশম গ্রেড” এর দাবীর বিষয়টি উঠে আসে। যা দীর্ঘ দশকের পরও আজও বাস্তবায়ন হয় নি। ইতোপূর্বে সকল ডিপ্লোমা পেশাজীবীদের এটি বাস্তবায়ন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সটি ৪বছর মেয়াদী না হওয়াই এর অন্যতম প্রধান বাধা ছিল যা এখন আর নেই। বর্তমানে মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সটি ৪বছর মেয়াদী।
করোনা মহামারীর সম্মুখযোদ্ধা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা চিকিৎসক, নার্সদের পাশাপাশি সর্বোচ্চ দিয়ে দেশ মাতৃকা ও দেশের জনগনকে একনিষ্ঠভাবে সেবা দিয়ে গেছে। তাদের এ দাবী আগামী দিনের স্বাস্থ্যসেবায় অধিক উৎপাদনশীলতা এবং দায়িত্বগ্রহনে সাহায্য করবে। শুধু তা-ই নয় তাদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবন মানোন্নয়নে এটি হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হলে সবাই মিলে একটি সুন্দর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মুল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য বিভাগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের এমন নজিরবিহীন সুন্দর আয়োজনের জন্য আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ জানান। একইসাথে তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, পেশাভিত্তিক বিদেশী প্রশিক্ষণের সুযোগসৃষ্টি, শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন ও নতুন পদসৃষ্টির পাশাপাশি অবিলম্বে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের চাকুরীতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
উত্তম কুমার, প্রধান সমন্বয়ক
স্বাস্থ্য বিভাগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও মিলনোৎসব ‘রণভেরী’২৪ আয়োজক কমিটি