রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন
ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় প্রবল বন্যা দেখা দিয়েছে। নৌকার অভাব ও পানির তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এতে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন জনপদের লক্ষাধিক মানুষ।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেড় মাসের ব্যবধানে তৃতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর থেকে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে তিন উপজেলার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক ও উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে বন্ধ আছে যান চলাচল। লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগও।
কিসমত ঘনিয়ামোড়া এলাকার বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, ঘরের ছাদ পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। আটকে পড়াদের উদ্ধারে দুই-একটি নৌকা কাজ করলেও পানির স্রোতের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা বেশি প্রয়োজন। দুইদিন ধরে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া ভারতের ত্রিপুরায় ডম্বুর গেট খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। এতে এদিকে পানির চাপ আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অ. দা.) মো. আবুল কাশেম বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতো পানি আগে কখনও দেখা যায়নি। মানুষ উদ্ধারেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এখনও বৃষ্টির সঙ্গে পানি বাড়ছে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, উপজেলার চিথলিয়া, সলিয়া ও অলকা এলাকায় অনেক মানুষ আটকা পড়েছেন। রাত থেকে ফায়ার সার্ভিস ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্ধার কাজ চলছে। কিন্তু নৌকার সংকট থাকায় ও পানির স্রোতের জন্য ঠিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। এ মুহূর্তে স্পিডবোটের প্রয়োজন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।