শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যে ধরনের সংস্কার করলে দেশের মানুষ দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাবে আমরা তা করতে চাই। আজ রবিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল নায়ক এদেশের জনগণ এবং সাধারণ শিক্ষার্থী। তাদের আন্দোলনের ফলেই আমি বেঁচে আছি।
সাধারণ মানুষরাই মূলত রাজপথে নেমে এসে আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমি সেই জনগণ এবং আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে আমরা একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় ছিলাম। যার হাত থেকে সমাজের কোনো স্তর বা অংশ রেহাই পায়নি।
বিটিআরসি তে গত ১৬ বছর নানা সমস্যা ছিল যা সমাধান হয়নি, অনেক দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে। বিটিআরসি নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই, কারণ গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সে জায়গা থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, এতে সারা দেশের মানুষের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে।
সবার মধ্যে একটি ধারনা জন্মেছে যে, আমরা এখনই পারব নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের মূল সমস্যা হচ্ছে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সিস্টেম ডেভেলপ হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো গড়ে উঠলে কোনো ব্যক্তি চাইলেও তার ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হত না। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার চর্চা হয়েছে।
এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ব্যক্তির ক্ষমতা প্রয়োগের চর্চা করা হয়েছে। এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক এ কাঠামোর নীতি এবং আইন যদি আমরা সংস্কার করতে না পারি তাহলে আমূল পরিবর্তন বলতে আমরা যা বুঝি তা কখনই আসবে না।’
বিটিআরসি সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা চালানো হয়েছে, গুম করা হয়েছে; যার সঠিক তথ্য আমরা এখনো পাচ্ছিনা। আমাকেও গুম করা হয়েছিল, কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস আজ আমি সেই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা এবং সেখানেই দাঁড়িয়ে কথা বলছি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা যাতে পিছনে ফিরে না যাই এবং আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ আর পিছনে ফিরবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি তরুণ প্রজন্ম যে নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায় বা রাষ্ট্রব্যবস্থায় তারা যে পরিবর্তন চায় তা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই মানসিকতা পরিবর্তন করে সবাইকে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, যে কেউ চাইলেই আর সে আকাঙ্ক্ষার বাইরে যেতে পারবে না।’ মতবিনিময়কালে বিটিআরসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।