রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে বিএনপি নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানক্লাব ‘নেবুলাস’-এর যাত্রা শুরু প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের নিঃস্ব করে কোটি টাকা প্রতারণা করে লাপাত্তা কৃষক লীগ নেতা হান্নান শেখ!
স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের দোসর মোঃ জালাল গংদের অত্যাচার-প্রতারণায় নিঃস্ব উত্তরার মেকানিক জহির

স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের দোসর মোঃ জালাল গংদের অত্যাচার-প্রতারণায় নিঃস্ব উত্তরার মেকানিক জহির

নিজস্ব প্রতিবেদক: পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের দোসর মোঃ জালাল গংদের অত্যাচার-প্রতারণায় নিঃস্ব হয়েছেন উত্তরার মটর মেকানিক জহির আলম।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী দেশের বাইরে পালিয়ে গেলেও তাদের অনেকেই দেশে অবস্থান করে নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য দেশের, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও সাধারণ জনগণের জন্য উৎপাত সৃষ্টি করেই যাচ্ছে। এমনই একজন হলেন মোঃ জালাল, পিতা- নূর হাজী, সাং- ভাটুলিয়া, ডাকঘর: নিশাদনগর, থানা- তুরাগ। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তুরাগ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে সাধারণ জনগণের জন্য তিনি ছিলেন এক মূর্তমান আতঙ্কস্বরূপ। তিনি এলাকায় কয়েকটি চালের আরদ দিয়ে চাল গুদারজাত করে সিন্ডিকেট ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।  ভয়ে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কিংবা তার কৃতকর্মের প্রতিবাদ জানানোর সাহসও পাননি অনেক ভুক্তভোগী। এমনই এক ভুক্তভোগী হলেন মোহাম্মদ জহির আলম। আওয়ামী সরকার এখন ক্ষমতায় নেই তাই তিনি সংবাদমাধ্যমে তার অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি মোহাম্মদ জহির আলম, পিতা- আব্দুল জলিল, মাতা- মিতা হাজেরা খাতুন, ঠিকানা- সাং ভাটুলিয়া তালতলা, কামারপাড়া, থানা- তুরাগ, জেলা- ঢাকা। তিনি পেশায় একজন মোটর মেকানিক। তিনি ভাটুলিয়া মৌজাস্থিত আরএস দাগ নম্বর ১৮৬ ও ১৮৭ জমির পরিমাণ কম বেশি ১৫ কাঠা (পালিত জমি) এর সম্মুখভাগে আদা পাক্কা তিনটি টিনশেড দোকান ঘর নির্মাণ করে মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে (৫০০০/-) ভাড়া নেন ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের এক তারিখে। সেই সময় মাটি ভরাট বাবদ এবং দোকান তৈরি পাব তার প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। সেখানে জহির আলম একটি মোটর গ্যারেজ বসান যার নাম আল্লাহর দান মটরস। পরবর্তীতে যখন তার ব্যবসাটা একটু জমজমাট অবস্থায় আসে তখনই তার ব্যবসার উপর চোখ পড়ে আওয়ামী সন্ত্রাসী মোঃ জালালের। মোঃ জালাল চাপ প্রয়োগ করে জহিরকে সেখান থেকে উৎখাত করতে চায়। পরবর্তীতে জহির তাকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিতে সম্মত হলে তাকে সেখানে ব্যবসা করতে দেয়। এভাবে কিছুদিন পর পর তার ওপর চাপ প্রয়োগ করে প্রাথমিক অবস্থায় ৫০০০ টাকা মাসোহারা নেয়। পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে মাসিক ১০ হাজার, তারপর ১৫ হাজার এবং সর্বশেষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসোহারা নিয়েছে মোঃ জালাল কিন্তু কোন রশিদ দেয় না। এই ব্যাপারে জহির থানায়ও যায় স্থানীয় কমিশনারের কাছেও যায়। থানায় লিখিত অভিযোগ করে কিন্তু কোন সুরাহা হয় না। পরবর্তীতে তার কাছে মাসিক ২৫ হাজার টাকা চাইলে জহির রশিদ ছাড়া কোন টাকা দিবে না বলে অস্বীকৃতি জানায়, আর তখনই শুরু হয় অত্যাচারের স্টিম রোলার তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাকে নির্যাতন করে বের করে দেওয়া হয় তার দোকান থেকে যাবতীয় মালামাল আটকে রাখে যার আনুমানিক মূল্য ছিল ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। মোঃ জালাল এ পর্যন্ত দুই তিন দফায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে জহির আলমকে মারধর করায়। এ অত্যাচারের যথাযথ বিচার দাবি করেছেন মোটর মেকানিক মোঃ জহির আলম।

জহির আলম বলেন, দেশবাসীর কাছে আজ আমার কিছু ব্যাক্তিগত কষ্টের কথা বলতে চাই, আমি আপনাদের কাছে টাকা গাড়ি-বাড়ী কিছুহ চাই না। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মা মারা যান। তখন আমার বয়স ছিলো ৮ বছর। মা মারা যাওয়ার ৪ মাস পরে বাবা পুনরায় বিবাহ করেন। তার ২ মাস পরে তিনি আমাদের বাড়াটি বিক্রয় করে দিয়ে সৎ মায়ের বাড়ীতে চলে যান এবং ওখানে নতুন বাড়ী কিনেন। এরপর থেকে আমার আর কোনো খোঁজ-খবর নেন না। আমাকে পৈত্রীক কোনো সম্পত্তি দেওয়া হয় নাই। আমরা ৩ ভাই ও ২ বোন এখন কি করবো? কোথায় যাবো? কার কাছে যাবো? কোনো উপায় না পেয়ে নিরুপায় হয়ে আমি ভ্যান গাড়ি চালানোর কাজ শুরু করলাম। এত অল্প বয়সে এ কাজ করে আমি আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পরলাম। অসুস্থতার কারনে আর ভ্যানগাড়ি চালাতে পারিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছুদিন পর আমি একটা হোটেলে কাজ নিলাম। এ সময় আমি মানুষের কাছে নিজের পরিচয় দিতে না পারায়, লোকজন নানা ধরনের কটু কথা বলতো। আর এসব কথা শুনতে না-পেরে আমি কোনো একটা রাতে অসহায়ের মত অচেনা শহর ঢাকাতে পারি জমাই। না-খেয়ে না-ঘুমিয়ে অবশেষে একটা কাজ পাই মিরপুরে একটি মিষ্টির দোকানে। লোকেরা বলতে থাকে তুমি এখনো অনেক ছোট, তুমি এ কাজ করতে পারবে না। পরে যোগাযোগ করে কোনো রকমে আমার ভাইয়ের খোজ পেলাম এবং তার সাথে যোগাযোগ করলাম। তিনি আমাকে তার কাছে চলে যেতে বলেন। তখন আমি তার কাছে টঙ্গী চলে গেলাম। আমার বড় ভাই আমাকে তখন কলম ফেক্টরীতে চাকরী নিয়ে দেয়। কিছুদিন পরে চাকরীতে কষ্ট সহ্য করতে না-পারায়, ছোট হওয়ায় আমাকে সেখানে আর কাজ করতে দেয়নি তারা। তার কিছুদিন পর আমার এক লোকের সাথে পরিচয় হয়, তিনি একজন মোটর গ্যারেজের ম্যানেজার। তিনি আমাকে বললেন তুমি কি আর করবে? আমার গ্যারেজে গাড়ির কাজ শিখ। আমি তার কথাতে গাড়ির কাজ শিখতে রাজি হয়ে গেলাম। প্রায় ৩ বছর কাজ শিখার পর আমি মোটামুটি মিস্ত্রী হয়ে যাই। মিস্ত্রি হওয়ার পর চাকরী করতে থাকি।

আমার দিনকাল ভালোই চলতে থাকে। এরমধ্যে একটা মেয়েকে পছন্দ ও তার সাথে সর্ম্পক হয়। কিছুদিনের মধ্যে আমরা বিবাহ করি। তার তিন বছর পর আমার ১টি মেয়ে সন্তান হয়। মেয়ে হওয়ার পর অনেক চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম নিজে কিছু করার। নাসির মামাকে বললাম সাহেব আলী মাদ্রাসার সামনে একটু সরকারী খালি জায়গা আছে। তিনি বললেন ৫ বছরের জন্য ভাড়া দেওয়া হবে– ৫০,০০০ টাকা এডভান্স এবং মাসিক ভাড়া ৯,০০০ টাকা দিতে হবে। তখন আমি বললাম, এতো টাকা কোথা থেকে দিব– আমি ৪৫,০০০ টাকা দিবো। এতে উনি রাজি হন আমার টাকা দেওয়ার মত কিছুই ছিল না (আমার স্ত্রী গার্মেন্টস এ কাজ করতো। তখন তার কাছে কিছু টাকা ছিল। আমি তাকে বললাম আমাকে কিছু টাকা দাও আমি গ্যারেজ নিয়েছি ৪৫,০০০ টাকা লাগবে। তখন সে আমাকে তার সঞ্চিত টাকাগুলো দিয়ে দিল। তার সে টাকা ও আমার কিছু জমানো টাকা দিয়ে আমি গ্যারেজের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয় করি। এভাবেই ওরু হয় আমার গ্যারেজের কাজ।

কাজ শুরুর ৫ মাস পর নাছির মামা আমাকে বললো ৩ মাস পর গ্যারেজ ছেরে দিতে হবে । আমি তখন বললাম আপনার সাথে ৫ বছরের চুক্তিনামা দলিল করা হয়েছিল। তিনি বললেন আমি অন্যজনের কাছে গ্যারেজ ভাড়া দিলে ১৫,০০০ টাকা ভাড়া পাবো। আমি বললাম, আমার চুক্তিপত্র সহ এডভান্স জমা আছে এবং আমি এখানে রাবিশ ফেলে জায়গাটি ভরাট করেছি, এখন কেন ছেরে দিবো? তখন তিনি বলেন, আমি এত কথা বুজি না– তোমাকে বললাম না– গ্যারেজ ছেরে দিবা। তখন আমি আরও লোকজনকে আমার এ বিষয়টি বলি, তারা সকলেই একই কথা বলে। লোকজন বলে নাসির সাহেব অনেক প্রভাবশালী ও অত্র এলাকার ধনাঢ্য লোক তিনি যা বলে তাই কর। আমি তখন চাপের মুখে বাধ্য হই গ্যারেজ ছারতে। সমাজের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গিয়েছিলাম বিচার চাইতে, কিন্তু কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। এটাই কি আমাদের সমাজের বিচার ব্যবস্থা?

এর কিছু দিন পরে আমি একটা লোকের সাথে কথা বললাম, উনি আমাকে জানালেন ৩ মাসের জন্য একটি গ্যারেজ ভাড়া দেওয়া হবে, ৩ মাস পর আবার ছেড়ে দিতে হবে। আমি তখন কোনো উপায় না পেয়ে রাজি হয়ে গেলাম ও ঐখানে গ্যারেজ চালু করলাম। এখানে গ্যারেজ চালানোর পাশাপাশি আমি অন্য জায়গায়র গ্যারেজ করার মত জায়গা খুজতে থাকি।  অবশেষে আমি একটি খালি যায়গা পেলাম। আমি যায়গার মালিকের কাছে গিয়ে কথা বললাম। তার নাম বিল্লাল হোসেন। উনি বললেন, জায়গা ভাড়া দিবো। এ্যাডভ্যঞ্চ ৫০,০০০ টাকা ও প্রতি মাসে ১২,০০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তখন আমি রাজি হয়ে যাই ও আমার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে ব্র্যাক থেকে ২০,০০০ টাকা লোন তুলি। আমার শাশুরী দেন ২০,০০০ টাকা বাকীটা আমার কাছে ছিল– ৫০,০০০ টাকা দিয়ে আমি দুই বছরের জন্য স্ট্যাম্প করে নেই। এখানে গ্যারেজ চালু করার ৮-৯ মাস পরে দুর্ভাগ্যবসত কুরবানির ঈদের ২০ দিন আগে বিল্লাল মামারে পুলিশ ধরতে আসে– তার নামে চাঁদাবাজী ও ছিন্তাই মামলা হিলো। তারপর একজন লোক আমাকে বলে বিল্লাল কোথায় আছে? আমি বললাম– জানি না।  তারপরে আমাকে বলে তোমাকে স্যার ডেকেছে, আমি স্যারের কাছে গেলাম। স্যার আমাকে জিঙ্গাসা করে– বিল্লাল কোথায় আছে? আমি বললাম– আমি জানি না। তারপরে তিনি বলেন– সে তোমার কি হয়? আমি বললাম– আমার কিছু হয় না। তারপর উনারা আমাকে গাড়িতে উঠতে বলে, আমি বললাম– গাড়িতে আমি উঠবো কেনো? তখন উনারা বলেন– তুমি গাড়িতে উঠো, তোমাকে ছেড়ে দিবো। আমি পুলিশের গাড়িতে উঠতে চাইনি, তাই তারা আমাকে জোর করে গাড়িতে উঠায় এবং বলে– তুই চিন্তা করিস না, তোকে ছেড়ে দিবো। তারপর তারা আমাকে থানায় নিয়ে যায়। আমার নামে সন্দেহমূলক মামলা দিয়ে আমাকে জেলে পাঠিয়ে দেয়। তখন আমার স্ত্রী ও শাশুরী কোঁটে গিয়ে উকিল ধরে ১০ দিন পর আমাকে ছাড়িয়ে আনে।  আমি ১০ দিন পর এসে দেখি আমার গ্যারেজ মরুভূমি হয়ে গেছে। আমার ছোট ভাই আমাকে দেখে কান্না কাটি করতেছে। গ্যারেজে কোনো কাজ নেই। তখন আমি আল্লাহ নামে আবার নতুন করে গারেজ চালু করলাম। তার ৪ মাস পরে বিল্লাল মামা আমাকে বলেন– তোমাকে গ্যারেজ ছেড়ে দিতে হবে, আমি অন্য একজনকে ২০ টাকা গ্যারেজ ভাড়া দিবো। তখন আমি চিন্তা ভাবনা করে দেখি এখানে থাকলে আমার অনেক বিপদ হতে পারে। তারপর আমি বাধ্য হয়ে গ্যারেজটি ছেড়ে দিলাম।

এরপর অন্য জায়গা খুজতে থাকি। একটা জায়গা পেলাম সরকারী কিন্তু কার কাছে গেলে আমি জায়গাটি ভাড়া নিতে পারবো! এক লোককে জিঙ্গাসা করলাম– তখন তিনি বললেন, জালাল মিয়া এই জায়গার দায়িত্বে আছে। তারপর আমি জালাল মিয়ার কাছে গেলাম। এই জায়গার ভাড়ার ব্যাপারে আমি উনার সাথে কথা বললাম। তিনি এডভান্স ৫০,০০০ টাকা ও মাসিক ১৪,০০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে শর্তে ভাড়া দিতে রাজি হন। আর এটা স্টাম্পের মাধ্যমে চুক্তি হবে। আমি উনার কথায় রাজি হলাম। জালাল মিয়া আমাকে বলেন– জায়গার মালিক কখনো যদি এসে তোমাকে জায়গার ভাড়া কত নাও জানতে চায়, তবে তুমি বলবে মাসে ১০,০০০ টাকা ভাড়া নেই। তারপর আমি গ্যারেজ চালু করি। তার এক সপ্তাহ পরে জালাল মিয়া আমাকে বলে– স্টাম্পটা আমাকে দাও আমি এটা সঠিক ভাবে করে দেবো। এরপর তিনি আমাকে স্টাম্প করে দেন ৫০,০০০ টাকা ও ১০,০০০ টাকা ভাড়া কন্টাক্ট ৩ বছছের জন্য।  ৩ মাস পরে জালাল মিয়া বলে– স্টাম্পটা ভাড়া দিতে গেলে সাথে নিশ। তারপরে আমি ভাড়া দিতে যাই জালাল মিয়ার কাছে। তখন জালাল মিয়া বলে আমাকে অন্য লোক ৩০,০০০ টাকা ভাড়া দিতে চায় তাই তোকে এখন থেকে ২৭,০০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তখন আমি অনেক কান্নাকাটি করে বলি– আমি ১৪,০০০ টাকা ভাড়া দেই, তাই দিতে কষ্ট হয়ে যায়– ২৭,০০০ টাকা কিভাবে দিবো। আমি গরীব মানুষ, আমার মা বাবা নাই, আমি একটা এতিম সন্তান এবং আমার দুইটা ছেলে মেয়ে আছে। আমার পরিবারকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো? আমাকে দয়া করুন। তাও তিনি মানলেন না, বলেন– আমার কথা মত ভাড়া না দিতে পারলে তুই গ্যারেজ ছেড়ে দিবি। আমি নিরুপায় হয়ে বললাম ২০,০০০ টাকা ভাড়া দিবো। তাও তিনি মানলেন না। আমি আর মিনতী করে বললাম– আমি ২২,০০০/- ভাড়া দিবো। তখন জালাল মিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে– ঠিক আছে তুই ২২,০০০ টাকাই দিস।তারপর আমি জায়গার মালিককে খুজতে থাকি, তিনি একজন সরকারি সচিব। জালাল মিয়ার ভয়ে আমি কারও কাছ থেকে মালিকের কোনো সন্ধান বা তার মোবাইল নাম্বারটাও সংগ্রহ করতে পারি না। তারপর দুই বছর পরে আমার গ্যারেজের সামনে জায়গার মালিক তার গাড়ি নিয়ে আসে। তখন আমি তার কাছে সবকিছু বিস্তারিত খুলে বলি– জালাল মিয়ার সম্পর্কিত, আমি উনার কাছ থেকে মোবাইল নাম্বারটাও রেখে দেই । তখন তিনি বলেন– আমি ব্যস্ত থাকি, তুমি একটা লিখিত অভিযোগ দাও। আমি তার কথা মত একটা লিখিত অভিযোগ দেই। পরে তিনি কোনো উত্তর দিল না। তার ৩-৪ দিন পর জালাল মিয়া আমার গ্যারেজে এসে আমাকে গালাগালি ও মারধর করে লোকজনের সামনে, কেউ ফিরাইনী। তিনি আমাকে তার বাসায় নিয়ে যেতে চায়। আমি তার বাসায় যেতে চাইনি বলে তিনি তার ছেলেকে ফোন করে নিয়ে আসে। তার ছেলে এসে আমাকে আরও মারধর করে এবং আমার গ্যারেজ বন্ধ করে দেয়। গ্যারেজে তালা মেরে সাইনবোর্ড লাগায়, গ্যারেজ ভাড়া দেওয়া হবে, লিখে। আমি কমিশনারের কাছে গিয়ে এসব কিছু বিস্তারিত বলি, তিনি আমাকে বলেন– তুমি থানায় যাও সেখানে গিয়ে অভিযোগ কর। আমি কিছুটা সাহস পেলাম এবং ভাবলাম আমার পাশে কাউকে হলেও পেয়েছি। তখন আমি থানায় গেলাম থানার অফিসারের সাথে দেখা করলাম এবং আমার সব কিছু বিস্তারিত বললাম। তিনি আমাকে অনেক উল্টা-পাল্টা কথা বলেন। তখন আমি বলি আমাকে কমিশনার স্যার পাঠিয়েছেন। তখন ওই অফিসার একটা সাদা কাগজে লিখিতো অভিযোগ নেন। তারপর আমি কমিশনার স্যার এর কাছে একটা ফোন করি, স্যার আমাকে বললেন– তুমি জালাল মিয়ার ফোন নাম্বারটা আমাকে দাও। আমি স্যারকে জালাল মিয়ার মোবাইল নাম্বারটা দিলাম। কমিশনার স্যার আমাকে বলেন– আমি একটা মিমাংসা করে ফেলবো। তারপর আমি জায়গার মালিকের কাছে যাই ও সবকিছু বিস্তারিত বলি। তিনি আমাকে বলেন এ ব্যাপারে আমি কিছু করতে পারবো না। আর এভাবেই ঘুরতে ঘুরতে আমি হতাশায় পতিত হলাম। আমার লোকজন নেই বলে আমি বিচার পাই না। আমি কি জালাল মিয়ার কাছে জিম্মি হয়ে গেলাম? আমার যদি লোকজন থাকতো, তাহলে জালাল মিয়া আমার এতগুলো টাকা খেতে পারতো না। তখন আমি নিরুপায় হয়ে ফিরে আসি। তার পরের দিন কমিশনার আমাকে ফোন দিয়ে বলে এটা তুমি মিমাংসা করে ফেল, নয়তো তোমাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দিবে। তবুও আমি থানা থেকে আমার অভিযোগ উঠাইনি। তারপর জালাল মিয়া আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে। গুন্ডা দিয়ে আমাকে বিভিন্ন রকম হুমকি দেয়। আমাকে বলে– তোর কত টাকা আছে? আমি তোকে এমন একটা মামলা দেব, তোর জেল খাটতে খাটতে জীবন শেষ হয়ে যাবে। তখন আমি বাধ্য হয়ে আপশনামা দেই। আমাকে কমিশনার কেনো থানায় পাঠালেন– আবার কেনো হুমকি দিয়ে আপোশনামা নিলেন? আমি গরীব বলেই বিচার পাইনি। আমার টাকা নাই বলেই আমি বিচার পাইনি। এ দেশে গরীবের কোনো বিচার নেই?

 

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com