শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
বন্দর নগরী চট্টগ্রাম এর সব চাইতে নিরাপদ ও হেভি ওয়েটধারী ভিভিআইপি ও ভিআইপি এলাকা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিমান বন্দর, যেখানে ২৪ ঘন্টা আনাগোনা রয়েছে, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর। তারপরেও কাউকে পরোয়া না করে এয়ার পোর্ট মেইন গেইট থেকে ১১নং ঘাট সুযোগ পেলে ৯ থেকে ৭ নং ঘাট পর্যন্ত এবং নেভাল একাডেমী রোড দিয়ে সী-বিচ পর্যন্ত নির্ভয়ে চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মোটর শ্রমিক নেতা বলেন এ অবৈধ গাড়িগুলোর ব্যাপারে হাই কোর্ট এবং চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী অলিগলিতে চলার জন্য বাধ্য করা হয়েছে এবং আপাতত আইন করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জানিনা কোন অদৃশ্য শক্তিতে গাড়িগুলো ভিআইপি রোডে চলে? সরেজমিনে দেখা যায়, গত ০৫/০৪/২০২৫ তারিখ সকাল ১১:০০ টার সময় এয়ারপোর্ট মেইন গেইটে দাড়িয়ে থাকা কয়েকটি টমটম ড্রাইভারের কাছে ভিআইপি আসা যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা পত্রিকা প্রতিনিধির উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং এক পর্যায়ে গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করেন। তারা ঐ প্রতিনিধিকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলেন যেদিক থেকে আসছেন সেই দিকে যান এবং যা মন চায় তা লেখেন কোন সমস্যা নাই। তারা আরও উচ্চস্বরে বলতে থাকেন যে, এখন দেশে কোন সরকার নেই যার যার আইন তার কাছে। স্থানীয় কিছু এলাকাবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী বুঝাযায় যে, এখানে কোন ধরনের পুলিশি মাশোয়ারা বা ঘুষের রেশ মাত্র নেই। তারপরেও অদৃশ্য শক্তিদ্বারা অবৈধ গাড়িগুলো ট্রাফিক পুলিশের সাথে লুকোচুরি খেলার মত কান্ড কলাপ করছে। পরে সেখান থেকে সরে গিয়ে একজন স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রশাসনের অজান্তে এই গাড়িগুলো গত ছাত্র আন্দোলনে ০৫ই আগষ্ট সরকার পতনের পর চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও এখন আবারও স্থানীয় কিছু পাতি নেতার শেল্টারে সরকার ঘোষিত অবৈধ গাড়িগুলো চলে বলে তিনি জানান। পাতি নেতাদের নাম জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অনিহা প্রকাশ করেন এবং একই দিন দুপুর ১২:৫০ এর সময় মেরিন একাডেমী রোডে ডিউটিরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট এর সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি বলেন আমরা পুলিশ হলেও তো মানুষ। এসব গাড়িগুলোকে আমরা যথাসময়ে দৌড়ানি দিয়ে থাকি, ততক্ষণ ভিআইপি রোডে থাকে না। আমরা সরে যাওয়ার সাথে সাথে আবারও নির্বিঘ্নে চলাচল করে। আমরা তারপরেও মাঝে মধ্যে দৈনিক ২-৩ টা গাড়ি আটক করে থাকি। তারপরেও এসব সরকার ঘোষিত অবৈধ গাড়িগুলো কে বা কার ইশারায় চলাচলে ভয় করে না তা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। তারপরেও আমরা যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যেন এই অবৈধ গাড়িগুলো ভিআইপি রোড থেকে একেবারে উচ্ছেদ করা যায়।
অবৈধ টমটম গাড়িগুলোর ব্যাপারে পতেঙ্গা জোনের টি.আই মনির এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন- যখনই আমরা গাড়িগুলো আটক করতে যাই তখনই স্থানীয় কিছু লোকজন পুলিশকে দোষারোপ করে এবং তাদের কে একটা কর্মসংস্থান করে দেওয়ার কথা বলে। তিনি এ নিয়ে আরও বলেন যতক্ষন পর্যন্ত কোন বড়ধরনের দুর্ঘটনা না হচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত স্থানীয় এলাকাবাসীরা সচেতন হবে না। তিনি আরও উৎকন্ঠার সাথে বলেন গত ০৫ই আগষ্টের পর পুলিশকে পুলিশই মনে করছে না কিছু অসাধু লোক। কিছু বলতে গেলেই গালিগালি শুনতে হয়। আপনারা পত্রিকায় লেখেন, আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে দেখি কি করা যায়। সরকার ঘোষিত অবৈধ এ টমটম গাড়িগুলোর ব্যাপারে এসিসট্যান্ট কমিশনার বন্দর, সালাহউদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি তো সবেমাত্র নতুন জয়েন্ট করেছি, আমি ঐ এলাকার টি.আই এর সাথে কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেওয়া বা অভিযানের ব্যবস্থা করব। উক্ত প্রতিবেদন লেখা অবস্থায় ভিআইপি রোডের পাশের স্থানীয় কয়েকজন বয়স্ক মুরব্বী বলেন এই অবৈধ গাড়িগুলোর কারনে আমাদের ছোট ছোট কোমলমতী শিশুরা স্কুলে এবং খেলাধুলা করতে দিতে আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। এমনকি গত পবিত্র রমজান মাসে ১০-১২টি ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে এই রোডে। তারা ট্রাফিক প্রশাসনের সু-দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন উক্ত গাড়িগুলো যদি বন্ধ করে দেওয়া যায় তা হলে আমরা ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নির্ভয়ে দিন কাটাতে পারি।