রবিবার, ২৭ Jul ২০২৫, ০৮:১২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে আখ্যায়িত আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের রোপণ,উত্তোলন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করলেও মাঠপর্যায়ে তার বাস্তবায়ন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। সরকার কিছুদিন আগে ভর্তুকি দিয়েছে নার্সারি মালিকদেরকে। তবুও থামছে না এই গাছ বিক্রি। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতীসহ ৫ টি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এখনো প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এই গাছের চারা। ফলে পরিবেশ সংরক্ষণে নেওয়া সরকারের উদ্যোগ কার্যত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পরিবেশবিদদের মতে,ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ মাটির নিচের পানি অতিরিক্ত শোষণ করে,যা মাটির আর্দ্রতা হ্রাস করে এবং পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই কারণে সরকার ইতোমধ্যেই সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি নার্সারিতে এসব গাছের চারা উৎপাদন ও রোপণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। এমনকি অনেক জায়গায় চারা ধ্বংস করে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবচিত্র ভিন্ন। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এখনই গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। এই সুযোগে জেলাসহ উপজেলার খোলা বাজার ও হাটগুলোতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইউক্যালিপটাস চারা বিক্রেতারা।
ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর বাজারে আজ রবিবার(২৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়,সেখানে একাধিক নার্সারি মালিক খোলামেলা ভাবেই বড় আকারের ইউক্যালিপটাস চারা বিক্রি করছেন। স্থানীয় এক নার্সারি মালিক জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞার অনেক আগে থেকেই তারা চারা উৎপাদন করেছেন। এখন সেগুলো বিক্রি না করলে বড় লোকসানের মুখে পড়বেন। তিনি বলেন,আমরা সবাই প্রণোদনা পাইনি। তাই বাধ্য হয়েই চারা বিক্রি করছি। গাছ কিনতে আসা ফাকরাবাদ গ্রামের আবদুল মান্নান বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকেই জানেন না এই গাছের ক্ষতিকর দিক। আবার ইউক্যালিপটাস গাছ দ্রুত বড় হয়,কম যত্ন লাগে—এই জন্যই অনেকে এটা পছন্দ করেন।
তিনি আরও বলেন,সরকার যদি নার্সারি মালিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়,আর কৃষি বিভাগ যদি গ্রামে-গঞ্জে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়,তবে এমন ক্ষতিকর গাছের চারা রোপণ করা বন্ধ হবে। ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ফরহাদ হোসেন জানান,সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলায় নার্সারি মালিকদের আর্থিক প্রণোদনার আওতায় এনে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস করা হয়েছে। তবে হাটবাজারে চারা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন,এ বিষয়ে এখনো কোনো পৃথক নির্দেশনা পাইনি। পরবর্তীতে সরকার যেভাবে নির্দেশনা দেবে,আমরা তা বাস্তবায়ন করব।
পরিবেশবিদরা বলছেন, ক্ষতিকর গাছের বিস্তার বন্ধে কেবল চারা ধ্বংস নয়,বাজার ও কৃষকের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং প্রশাসনিক নজরদারি হাট বাজারে জোরদার করতে হবে।